সাতক্ষীরা শহরতলির কাশেমপুর মালিপাড়া এলাকায় সালাহউদ্দিন আহমেদ (১৬) নামের এক ইজিবাইক চালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহতের বন্ধু ঘাতক সাগর হোসেন। গাঁজা কেনার ২০০ টাকার জন্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শামসুল হক শামস্ বলেন, শনিবার দুুপুর আড়াইটার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শনিবার বেলা ২টার দিকে পুলিশ শহরতলির কাশেমপুর মালিপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ (১৬) নামের এক ইজিবাইক চালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ উদ্ধারের তিন ঘন্টার মধ্যে বিকেলে সালাহ্উদ্দীন আহমেদ হত্যার অভিযোগে তার বন্ধু সাগর হোসেনকে শহরের রসুলপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।
সাগর হোসেনকে আটকের পর পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিহত সালাউদ্দীন এবং তার বন্ধু আসামী সাগর (১৪) ৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে একত্রে সালাউদ্দীনের বাসায় শুয়ে ছিল। তারা দুইজনই মাদকাসক্ত। সাগর সালাউদ্দীনকে গাঁজা কেনার জন্য ২০০ টাকা দেয়। কিন্তু সালাউদ্দীন গাঁজা না নিয়ে এসে সাগরকে জানায় যে, গাঁজা আনার সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে গাঁজা ফেলে পালিয়ে আসে। গাঁজা না আনায় সাগর সালাউদ্দীনকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাতে একত্রে শুয়ে পড়ে। সালাউদ্দীন ঘুমিয়ে পড়লে রাত ৩টার দিকে সাগর ঘুমন্ত অবস্থায় সালাউদ্দীনকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। সালাউদ্দীনের দেহ নিস্তেজ হয়ে পড়লে সে ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল সকালে সাগর তার বাবা শহিদুল ইসলামকে ফোন করে ঘটনাটি জানায় এবং সালাউদ্দীনের বাবাকে জানাতে বলে।
পরবর্তীতে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে পুলিশ সংবাদ পেয়ে বেলা ২টার দিকে সালাউদ্দীনের লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেপ্তারের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা শাখাসহ উদ্ধর্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। বিকাল ৪টার দিকে সাগরকে রসুলপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাগর ঘটনার আদ্যপাস্ত বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশ তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি সাগরের দেখানো মতে বেতলা বাইপাস নয়নের গ্যারেজ হতে উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: সজিব খান (অপরাধ ও প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল হক (সাতক্ষীরা সার্কেল), মোঃ ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ ইয়াসিন আলম, সাতক্ষীরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বুরহান উদ্দীনসহ উদ্ধর্তন কর্মকর্তাগণ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং যৌথভাবে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম