সাতক্ষীরায় দেবর ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিধবা ভাবীর সম্পত্তির ভাগ না দিয়ে তাকে হাকিয়ে দেয়া ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পাটকেলঘাটা থানার রথখোলা পুলেরবাজার (নগরঘাটা) গ্রামের মৃত ফখরুল ইসলাম ওরফে বাবু’র স্ত্রী মিনারা আফরোজ এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অসুস্থ্যতা জনিত কারণে বিগত ২০১৮ সালে দুই কন্যা সন্তানকে রেখে আমার স্বামী ফখরুল ইসলাম ওরফে বাবু মারা যান। এর পর থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে মৃত স্বামীর ভিটায় অতিকষ্টে জীবন যাপন করছি। আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় পৈত্রিক সূত্রে, খরিদা সূত্রে, আমার নামের সম্পত্তি ও কতিপয় জমির মালিকদের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ২০০ বিঘা জমিতে একটি মৎস্য ঘের পরিচালনা করে আসছিলেন।
মিনারা আফরোজ অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর নাটোরের ইউএনও হিসেবে কর্মরত আমার দেবর জাহাঙ্গীর আলমের সহযোগিতায় আরেক দেবর নজরুল ইসলাম মৎস্য ঘেরটি দখল করে নেয়। এসময় তারা আমার স্বামীর ঘেরে থাকা ৬০ লাখ টাকা মূল্যের মাছ তুলে নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এছাড়া ব্যক্তিগত মালামাল ও মটরসাইকেলসহ অন্যান্য প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়। মৃত স্বামীর মাছের ঘের দখলে নিয়ে তারা আমাকে বলে “তুমি মহিলা মানুষ ঘের পরিচালনা করতে পারবে না, আমরা প্রতিমাসে তোমাকে ঘের বাবদ ৪০ হাজার টাকা দিব।” কিন্তু কিছুদিন পর টাকা না দিয়ে তালবাহনা শুরু করে এবং আমার সাথে দূর্ব্যবহার করার পাশাপাশি হয়রাণি করতে থাকে।
তিনি আরো বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর তার দুই সন্তানকে বুকে আঁকড়ে ধরে তারই ভিটায় অতি কষ্টে জীবন যাপন করছি। কিন্তু আমার দেবররা আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। বিশেষ করে আমার কোন ছেলে সন্তান না থাকার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে পরসম্পদ লোভী ইউএনও জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে নজরুল ইসলাম আমার প্রাপ্য সম্পদের ভাগ না দিয়ে উল্টো আমার স্বামীর ভিটা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে ও আমাকে নানাভাবে হুমকি প্রদর্শন করছে। এছাড়া আমরা ঘেরটি জাহাঙ্গীর ও নজরুল ভোগদখল করলেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আমাকে কোন টাকা দিচ্ছে না। ফলে তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনে দুই মেয়েকে নিয়ে আমি বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তিনি একজন বিধবা অসহায় নারী হিসেবে ওই ইউএনও’র কবল থেকে মৃত স্বামীর সম্পত্তির প্রাপ্য অংশ বুঝে পাওয়ার দাবিতে ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয় জানতে চাইলে নাটোরের ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পাবলিকের জমি যদি তাকে না দেয় তাহলে আমাদের করার কি আছে। আমার ভাইয়ের অংশের জমির হারির টাকা তাকে দেয়া হয়। তাছাড়া ৬/৭ মাস আগে আমাদের না জানিয়ে তিনি পুনরায় বিয়ে করেছেন। তার ওই স্বামীকে আমাদের বাড়িতে এনে রেখেছেন। এরপরও আমরা কিছুই বলি না। তিনি আরো বলেন, আমিতো এলাকায় যাই না। তাছাড়া তার সাথে আমাদের কোন ভাইয়ের কথাও হয়না। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন। আপনারা এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিলে তার সর্ম্পকে জানতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই