সুনামগঞ্জের নওয়াগাঁ গ্রামে সংখ্যালঘু ৮০ টি পরিবার ও ছয়টি মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে সংগঠণের আহবায়ক এড. পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ, জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সভাপতি গোষ্ঠ বিহারী মন্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা শাখার সহসভাপতি এড. সোমনাথ ব্যাণার্জী, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, রঘুনাথ খাঁ, সাংবাদিক অসীম বরণ চক্রবর্তী, শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদের তালা শাখার সহ সভাপতি নারায়ন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাতক্ষীরা শাখার সদস্য সচীব গোপাল মন্ডল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, হেফাজত ইসলামের একাংশের সভাপতি মামুনুল ইসলামের নির্দেশনায় বুধবার সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নওয়াগাঁ গ্রামের ৮০টি হিন্দু পরিবার ও ছয়টি মন্দিরে প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার উপর। মামুনুল ইসলামকে নিয়ে ফেসবুকে এক হিন্দু যুবক স্টাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে হেফাজত ইসলাম নওয়াগাঁও গ্রামে মিছিল করার ঘোষণা দিলেও সব কিছু জেনে শুনে প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নীরব ভূমিকা পালন করেছে। ফলে হেফাজত হিন্দুদের উপর এ ধরণের ববর্রোচত হামলা চালিয়েছে। ২০১২ সালে মহানবীকে কটুক্তি নিয়ে খবরের কাগজে মিথ্যে সংবাদের কারণে কালিগঞ্জের ফতেপুর ও চাকদাহে ১৫ টি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে প্রেট্রোল ঢেলে আগুণ দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও দীর্ঘ নয় বছরে কোন বিচার হয়নি। ফলে শ্যামনগরের কাছরাহাটি অশোক মন্ডলসহ পাঁচটি পরিবারের উপর হামলা হয়েছে। একই উপজেলার চাঁচাই গ্রামে মণষা বেদী ভাঙচুর ও ঋষি পরিবারের চার সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
আশাশুনির নাটানায় ডাঃ সুদয় মন্ডল কালীমন্দির ও বাড়িঘর বাঙচুর করা হয়েছে। স্বরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা চঞ্চলা দাসকে চাল পড়া খাইয়ে চোর সাজানো হয়েছে। এসব যেন প্রতিদিনের ঘটনা। অধিকাংশ ঘটনায় মামলা হয়নি। আবার মামলা হলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করায় আসামী গ্রেপ্তার হচ্ছে না। ফলে সন্ত্রাসী ও মৌলবাদিদের হাত শক্ত হচ্ছে। বক্তারা এ ধরণের সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের অবিলম্বে গ্রেপপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম