খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

কালিগঞ্জের ৪০ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের নরহরকাটি মৌজার ৫০বিঘা অর্পিত সম্পত্তিতে বসবাসকারি ৪০টি ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেওয়ানী আদালত ও ভূমি আপিল বোর্ডে হেরে যাওয়ার পরও আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে দেওয়ানী রিভিশন করে কয়েকবার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ভূমিহীনদের অভিযোগ।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের মোবারক আলীর পিতা আব্দুর রহমান কালিগঞ্জ উপজেলার নরহরকাটি মৌজার প্রায় ৫০বিঘা জমি নীলকান্ত ঘোষের সাথে বিনিময় করার চেষ্টা করলে তা রেজিস্ট্রি বিনিময় না হওয়ায় পরবর্তীতে তা ‘খ’ তপশীলভুক্ত করা হয়। ওই জমি হাজী আব্দুর রহমান স্টেটের নামে দেওয়া হয়। মোতালি¬ হন আব্দুর রহমান। বর্তমানে ওই এস্টেটের মোতালি¬র দাবিদার আব্দুর রহমানের পোতা আনোয়ারুল ইসলাম। ওই জমিতে ১৯৭৮ সাল থেকে ৪০টি ভূমিহীন পরিবারে বসবাস করতো। যদিও ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর ‘খ’ তপশীল বাতিল করা হয়। খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের ৪১/১২ মিস আপিল মামলায় ওই জমি সরকারের ১/১ নং খতিয়ানে রেকর্ড বহাল থাকে। এরপরও দেওয়ানী মামলা ও ভূমি আপিল বোর্ডের মামলায় জমি নিজেদের প্রমান করতে ব্যর্থ হয়ে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে আনোয়ারুল ইসলাম ও তাদের সহযোগীরা।

একপর্যায়ে আনোয়ারুল ইসলামের বাবা মোাবারক আলী সরকারের বিরুদ্ধে যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে ২৪/২০১০ মামলা করে নিষেধাজ্ঞা না পেয়ে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১৮০৩/২০১৩ দেওয়ানী রিভিশন মামলা করে এ পর্যন্ত কয়েকবার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা নেয়। ওই মামলার ৯নং বিবাদী আব্দুল হামিদ মারা গেলেও তিন নং বিবাদী কেরামত আলী ওরফে লিয়াকত আলী পক্ষভূক্ত হয়েছেন। পিরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গত বছরের ২৬ নভেম্বর আনোয়ারুল ইসলাম ওই জমি ‘খ’ তপশীলভুক্ত করে অর্পিত সম্পত্তির হোল্ডিং খুলে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করার আদেশ পাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মৌতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার অসীম কুমার হালদারের গত বছরের ২২ ডিসেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ি ওই জমির একাংশে বেশ কয়েকটি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে ও সেখানে যৌথভাবে মাছ চাষসহ চাষাবাদ করে বলে উলে­খ করা হলে তার আবেদন নাম’ মঞ্জুর হয়।
একপর্যায়ে ৪৩ বছর ধরে ওই জমিতে বসবাসরত ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠলে ভূমিহীন কেরামত আলী ওরফে শওকত আলী বাদি হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (পিটিশন-৩৪৮/২১ নং) দায়ের করেন। এ খবর পেয়ে গত ১০ জানুয়ারি ভূমিহীন আবুল হোসেনের বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট শেষে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আবুল হোসেন বাদি হয়ে আনোয়ারুল ইসলামসহ ১৪জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

ভূমিহীন কেরামত আলী জানান, আবুল হোসেনের বাড়িতে আগুন দিয়েও সুবিধা করতে না পারায় আনোয়ারুল ইসলাম ওই ৫০ বিঘা জমির মধ্যে ৪০ বিঘা জমি একই এলাকার মাজাহারুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, হবিবর রহমান ও আকবর আলীর কাছে ইজারা দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার কালিগঞ্জ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত সহকারি পুলিশ সুপার ইয়াছিন আলীর কাছে তাদের কয়েকজনকে ডাকা হলে তারা জানতে পারেন। লীজ গ্রহীতারা ভূমিহীনদের জমি দখল করার লক্ষ্যে বুধবার ওই জমির পাশে কাটা তার ও বাঁশ রেখেছেন। ওই জমি জবরদখল করতে আদালতের ১৪৫ ধারার নোটিশ ভঙ্গ করে তাদেরকে যে কোন সময় উচ্ছেদ করতে পারেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন। তিনি এব্যাপরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তবে এ ব্যাপারে আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!