আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সবকিছু ছাড়িয়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী দিথী খাতুনের নাম। তিনি কলারোয়া পৌরসভা ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
দিথী খাতুনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে এক ভিন্নমাত্রার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে কলারোয়ার পৌর এলাকায়। তার নির্বাচনী প্রতীক আংটি। দিথী খাতুন ভোটারদের সমর্থন আদায়ে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে চালাচ্ছেন গণসংযোগ। যাচ্ছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। সাথে থাকছেন তার সমগোত্রিয় সাথীরা। অনেক এলাকায় তার নির্বাচনী প্রচরনায় অংশ নিচ্ছেন এলকার বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিরাও। অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে সমান তালে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তৃতীয় লিঙ্গের হয়েও এতটুকু সংকোচবোধ নেই তার মধ্যে। অন্য একজন সাধারণ মানুষের মত জনগণের সেবা করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন দিথী খাতুন।
বিগত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পৌরসভা নির্বাচনে দিথী খাতুন চুড়ি প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো একই ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বী করেছিলেন। যদিও ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি। এবারের পৌর নির্বাচনে দিথী খাতুনের অবস্থান নিয়ে তাই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যদিও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী হওয়ায় গণমাধ্যমের কল্যাণে তিনি এখন সবার পরিচিত মুখ। সেই সাথে পাচ্ছেন সহযোগিতা।
নির্বাচিত হয়ে পৌরভবনে যেতে এবার তাকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে হচ্ছে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী শাহানাজ খাতুন, চশমা প্রতীকের প্রার্থী রূপা খাতুন, জবাফুল প্রতীকের হাসিনা আক্তার ও টেলিফোন প্রতীকের প্রার্থী জাহানারা খাতুনের সাথে।
দিথী খাতুনের আশা, এবার তিনি নির্বাচনী বৈতরণী পেরিয়ে যাবেন। এজন্য বিগত নির্বাচনে পরাজিত হয়েও দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসা, দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার ফিস দেওয়া, কন্যা দায়গ্রস্তদের সহায়তা করাসহ সবসময় বিপদে আপদে মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি।
দিথী খাতুন বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। নির্বাচিত হলে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার সমুন্নত রাখা ও নারী শিক্ষা বিস্তারে কাজ করবো। নির্বাচতি না হতে পারলেও মানুষের কাছ থেকে সরে যাব না। নিজের সাধ্যমত আমৃত্যু তাদেরকে সহযোগিতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাব। তার এই এগিয়ে যাওয়ার পথে তিনি পৌর এলাকার ভোটারসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/কেএম