সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম কৈখালী গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও একই গ্রামের মনো মিস্ত্রির ছেলে মিজানুর রহমান (৪০) কে বাঘে ধরার আলোচিত ঘটনায় চিহ্নিত গরু পাচারকারী মামুন, আইজুল ও সোহারাবসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিখোঁজ রতনের বাবা কফিলউদ্দীন বাদী হয়ে রোববার (২৪ জানুয়ারি) শ্যামনগর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় কৈখালী ইউনিয়নের সাহেবখালী গ্রামের কয়ালপাড়ার জাহার আলী কয়ালের ছেলে মামুন, রুহুল আমিন কয়ালের ছেলে আইজুল ও ভদ্রখালী গ্রামের মতিয়ার গাজীর ছেলে সোহারাব বাদীর ছেলে রতনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। সেই থেকে রতন নিখোঁজ রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, রতনের পিতা কফিলউদ্দীন ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে ছেলেকে না দেখে ছেলের খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মামুন, আইজুল ও সোহারাব রতনকে ডেকে নিয়ে গেছে। কফিলউদ্দীন মামুনের কাছে জানতে চাইলে মামুন আশ্বাস দিয়ে বলে রতন, মিজান ও মুসা একসাথে একটা কাজে গেছে দ্রুত ফিরবে। দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পুনরায় আইজুলের কাছে জিজ্ঞাসা করলে সেও একই কথা শোনায়। পরে বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে আবু মুসা ফোন করে কান্নাকাটি করে পরিবারকে জানায় রতন ও মিজানকে বাঘে ধরেছে। স্থানীয় ভারতীয় জেলেরা মুসাকে উদ্ধার করে। পরে মুসা ভারতে ১ দিন থাকার পর গত ২৪ জানুয়ারি বাড়িতে ফিরে আসে এবং বিস্তারিত জানায়।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এসআই হাবিব তদন্ত করছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে, ২৪ জানুয়ারি দুপুরে বাড়ি ফিরে আসা আবু মুসার দেওয়া তথ্য মতে, রতন, মিজানুর রহমান ও আবু মুসা স্থানীয় চিহ্নিত গরু পাচারকারী মামুন ও আইজুলের গরু আনতে সুন্দরবনের মধ্যদিয়ে নদী পথে ভারতে যাচ্ছিলেন। পথে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রয়োজনীয় কাঠ কাটতে বনে প্রবেশ করলে একটি বাঘ মিজানুর রহমানকে প্রথমে আক্রমণ করে। এসময় রতন চিৎকার করলে বাঘ রতনকেও আক্রমণ করে। তখন খালে ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকার নিচে আশ্রয় নিয়ে কোন মতে জীবনে রক্ষা পায় মুসা।
রতনের বড় বোন জানান, সোমবারের দিন মামুন ও সোহরাব তাদের বাড়িতে আসে। এসময় তিনি তাদের বড় কথা বললে তারা রতনের কাছে নালিশ করে। রতন এজন্য বাড়ি এসে তাকে মারপিটও করে। পরে বুধবারের দিন তারা রতনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তারা শুনতে পান রতনকে বাঘে নিয়ে গেছে। তিনি এঘটনার বিচার দাবি করেন।
রতনের স্ত্রী বলেন, মামুন আরিজুলসহ কয়েকজন বুধবার রতনকে নিয়ে যায়। তাকে নিয়ে মেরে ফেলেছে নাকি বাঘে ধরেছে জানি না। আমরা তার মরদেহ অথবা তাকে জীবিত চাই।
খুলনা গেজেট/কেএম