যশোরের প্রবীণ সাংবাদিক ও সংবাদপত্র জগতের আলোকবর্তিকা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে গত ২৭ জুলাই তিনি ভর্তি হন। সেখানে দেশবরেণ্য চিকিৎসক অধ্যাপক এম. এ. রশিদের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। হার্টে ৩টি রিং স্থাপনের পর বৃহস্পতিবার তিনি যশোরে ফেরেন।
রুকুনউদ্দৌলাহর পিতা মরহুম মোকসেদ আলী। শৈশব-কৈশোর কেটেছে নওগাঁয়, বড়ভাই আসফউদ্দৌলার কাছে থেকে। নওগাঁ কেডি স্কুলে পড়াকালীন বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের দামামা। রাজনৈতিকভাবে সচেতন রুকুনউদ্দৌলাহ পরিবারের সাথে চলে যান ভারতে। শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ শেষে ফ্রিডম ফাইটার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ধর্ম, মানবতা ও সাংবাদিকতা ছাড়া অন্য কোনো পেশায় যুক্ত হননি তিনি। দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম দৈনিক সংবাদ-এর সঙ্গে চার দশক ধরে যুক্ত ছিলেন। সেখানে তার নিয়মিত কলাম গ্রাম-গ্রামান্তরে বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এছাড়া তিনি চ্যানেল আই, রেডিও টুডে-তেও কাজ করেছেন। যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্ফুলিঙ্গ, দৈনিক ঠিকানা, দৈনিক রানার ও দৈনিক কল্যাণ-এ বার্তা সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি যশোর থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক যশোরের কাগজ-এর সম্পাদক ছিলেন।
পেশাগত সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন আইডিই পদক, যশোর শিল্পীগোষ্ঠী পদক, জ্ঞানমেলা পদক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বজলুর রহমান স্মৃতিপদক।
শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে গ্রাম-গ্রামান্তরে, নবযুগ প্রকাশনী থেকে মুক্তিযুদ্ধে যশোর, নবরাগ প্রকাশনী থেকে আমার কৈশোর আমার মুক্তিযুদ্ধ, মানুষের ভাবনা মানুষের কথা এবং ছোট ছোট কথা অচেনা মানুষ—এমন একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার।
খুলনা গেজেট/এসএস