শ্রেণীকক্ষে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোর অভিযোগ এনে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৭ আগষ্ট) বেলা ১০টার দিকে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় শিক্ষক শফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার (১৬ আগস্ট) ক্লাস শেষে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় এক ছাত্রীকে নিয়ে দীর্ঘ ৩৭ মিনিট অবস্থান করেন শিক্ষক শফিকুর রহমান। পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামসহ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের সঠিক প্রতিকার না মেলায় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে বেলা ১০টার দিকে সহকারী শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে টেনে হেচড়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
তবে স্কুল শিক্ষক শফিকুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।
এদিকে এঘটনায় শিক্ষক শফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, সকাল ১০টার দিকে বিএনপি ও যুবদল নেতা সেলিম আক্তার মন্টু, কামরুজ্জামান সবুজসহ ১০/১২ জন লাঠিসোটা ও রড ও হাতুড়ি নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। তারা অফিসকক্ষে ঢুকে শিক্ষক শফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালায় এবং পরে তাকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। পরে শিক্ষককে উদ্ধার করেন সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। এসময় তাকে আবার স্কুলে গেলে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল বলেন, আমি বিদ্যালয়ে এসে ঘটনাটি শুনেছি। তবে লিখিত বা মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে অবশ্যই শোকজ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষককে এভাবে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।
বল্লী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম আক্তার মন্টু বলেন, এবিষয় আমি কিছু জানিনা।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপরেশন্স) সুশান্ত কুমার ঘোষ জানান, এঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ অফিসারকে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু বলেন, যদি কোনো নেতাকর্মী অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে