সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা এলাকায় আখ চাষ ক্রমেই বিলুপ্তির পথে। কৃষকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর কেটে গেলেও কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা তো দূরের কথা, তাদের দেখা পর্যন্ত মেলে না।
সরেজমিনে জানা গেছে, এক সময় আখ চাষ করে গুড় ও পাটালি উৎপাদনে এলাকার কৃষকরা লাভবান হতেন। কিন্তু বর্তমানে আখের ফলন কমে যাওয়া, রোগবালাই বৃদ্ধি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার অভাবে আখ চাষ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
জুজখোলা গ্রামের আখ ব্যবসায়ী ছাদের আলী জানান, “১৫-২০ বছর ধরে কৃষকদের কাছ থেকে আখ কিনে গুড় ও পাটালি তৈরি করি। আগে লাভবান হলেও এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। সামান্য কিছু জমিতে আখ চাষ হলেও প্রায় সবই রোগে আক্রান্ত হয়, ফলে ফলনও কম।”
আখ চাষি নুরুজ্জামান বলেন, “আমার বয়স ৪৫ বছর, আজ পর্যন্ত কৃষি অফিসারের দেখা পাইনি। আমার এলাকায় কে কৃষি কর্মকর্তা সেটাও জানি না। কৃষকরা সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত।”
অরুন মল্লিক বলেন, “আমরা আখ চাষি হলেও কোনো সুবিধা পাই না। সুযোগ-সুবিধা পেলে অন্তত ৩-৪ বিঘা জমিতে আখ চাষ করতে পারতাম।”
আলমগীর হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, “আগে মাঠভরা আখ থাকত, শিয়ালের ডাক শোনা যেত আখবনে। গুড় মাড়াইয়ের সময় চারিদিকে মিষ্টি সুগন্ধ ছড়াত। এখন আর আখ নেই, কৃষকরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।”
এ বিষয়ে সরুলিয়া ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা দিলিপ কুমার বলেন, “আগে আখ চাষে তেমন কোনো সুবিধা দেওয়া হতো না। তবে বর্তমানে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জি.কে.বি.এস.পি প্রকল্প আখচাষিদের সহায়তা দিচ্ছে।”
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, “আখ একবছরের ফসল। কৃষকরা বছরে ২-৩টি ফসল তুলতে চান বলে আখ চাষে আগ্রহ কমে গেছে।”
খুলনা গেজেট/এসএস