সাতক্ষীরার তালায় ছেলে হাবিবুর মোড়লকে হত্যায় ঘটনায় গ্রেপ্তার মা পারুল বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকালে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম পঞ্চম আদালতের বিচারক অর্পিতা আক্তারের কাছে তিনি এই জবানবন্দি প্রদান করেন।
পারুল বেগম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আটারই গ্রামের আব্দুল্লাহ মোড়লের স্ত্রী।
ছেলে হাবিবুর মোড়ল (৩০)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে তালা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করলে মঙ্গলবার বিকালে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
পারুল বেগম জানান, মেয়ে সুমাইয়াকে খর্ণিয়াতে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে জন মজুর খেটে দিন চালান তিনি। তার ছেলে ভ্যানচালক হাবিবুর রহমান একজন মাদকাসক্ত। দুই বছর আগে দক্ষিণ আটারই গ্রামের শান্তা খাতুনের সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তাদের ১০ মাসের একটি শিশু সন্তান আছে। এক বছর আগে ছেলে হাবিবুর রহমান তার গলায় দা ঠেকিয়ে ১৪ শতক জমি এক লাখ ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য করে। নেশা করে সে ওই টাকা নষ্ট করার পর তার কাছ থেকে মটর সাইকেল নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলো।
পারুল বেগম আরো জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে হাবিবুর রহমান ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফেরে। এ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। এ সময় সে তার কাছে একটি মটর সাইকেল কেনার টাকা চায়। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ধান কাটার কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো কাস্তে নিয়ে তাকে মারতে আসে। এ সময় তার (পারুল) জীবন বাঁচাতে আসে নিহতের বউ শান্তা। তার ও শান্তার সঙ্গে ধাক্কা ধাক্কির এক পর্যায়ে হাবিবুর মাটিতে পড়ে গেলে তার হাতে থাকা কাস্তে কপালে ও গলায় লাগে। তিনি ও বউমা শান্তা রাত ১০টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শান্তা খাতুন বাদি হয়ে তার শাশুড়ি পারুল বেগমের নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম মঙ্গলবার বিকালে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম পঞ্চম আদালতের বিচারক অর্পিতা আক্তারের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাঈনুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের মা পারুল বেগম মঙ্গলবার বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে হাবিবুরের মরদেহ স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে