খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে পরিচালকদের অনাস্থা, চিঠি দেয়া হয়েছে ক্রীড়া পরিষদে
  নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে যে গেজেট প্রকাশ করেছে তা বাতিল করেনি আপিল বিভাগ, সাংবিধানিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের
শিশুদের খেলার পার্কে মেলাসহ সব আয়োজন স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি

জাতিসংঘ পার্ক মেলার জন্য ইজারা নিতে ৭ আবেদন, বিপাকে কেসিসি

এ এইচ হিমালয়

খুলনা নগরীর জাতিসংঘ শিশু পার্ক ইজারা নিতে পৃথকভাবে আবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ছাত্র প্রতিনিধি ও এনজিও। তারা সবাই আগামী ঈদুল আযহা উপলক্ষে পার্কে মেলা বসাতে চান। এর মধ্যে একটি কোম্পানি ৭ বছরের জন্য পার্কটি ইজারা চেয়েছেন।

নগরীতে শিশুদের বিনোদনের একমাত্র পার্কটি ঘিরে বাণিজ্যিক তৎপরতায় উদ্বিগ্ন নাগরিক নেতারা। তাদের ভাষ্য, নগরীর প্রাণকেন্দ্রে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত পার্ক মাত্র একটিই। পার্কের একপাশে খুলনার অন্যতম বড় বেসরকারি হাসপাতাল, অন্যপাশে মসজিদ রয়েছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে বিগত দিনগুলোতে পার্কটির যথেচ্ছ ব্যবহারে একদিকে শিশুরা যেমন খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অন্যদিকে রোগীরা কষ্ট পেয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে পার্কটিতে মেলাসহ সব ধরনের গাণ-বাজনার আয়োজন স্থায়ীভাবে বন্ধ করা প্রয়োজন।

কেসিসি থেকে জানা গেছে, নগরীতে কেসিসির পার্ক রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে গোলকমনি, নিরালা ও সোনাডাঙ্গা শিশু পার্ক রয়েছে শুধু নামেই। সেখানে বিনোদনের নূন্যতম পরিবেশ নেই। হাদিস পার্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি থাকায় সেখানে শিশুদের খেলার পরিবেশ নেই। খালিশপুর শিশু পার্কটি ইজারা দেওয়া। অতিরিক্ত প্রবেশ মূল্যের কারণে সেখানে নি¤œ আয়ের পরিবারের শিশুরা প্রবেশের সুযোগ পান না। একমাত্র জাতিসংঘ শিশু পার্কটিতে শিশুসহ সব বয়সের নারী পুরুষ ভিড় করেন। ভঙ্গুর রাইডগুলোতে কোনো রকম বিনোদনের তৃষ্ণা মেটান শিশুরা। কিন্তু দুই ঈদসহ বছরের বিভিন্ন সময় পার্কটি ইজারা দেওয়া হয়। তখন খেলাধুলা বন্ধ থাকে। এজন্য জাতিসংঘ পার্কে স্থায়ীভাবে সব ধরনের আয়োজন বন্ধ রাখার দাবি দীর্ঘদিনের।

কেসিসি থেকে জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল জাতিসংঘ পার্কে ৭ দিনের জন্য ঈদ মেলা করার জন্য আবেদন করেছেন সালমানস ইউকে নামের একটি সংগঠনের আহŸায়ক মেহেদী হাসান শাকিল। ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পার্কটি এই সংগঠনকে ইজারা নেওয়ার জন্য তদবির করছেন।

গত ১২ মে ২০ দিনের জন্য ঈদ মেলা করতে পার্কটি ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছেন ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জামির হোসেন দিপু।

গত ১৩ মে খুলনা জেলা যুবদলের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহুল হাসান শুভ ২৩ দিনের জন্য ঈদ মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন।

পরদিন ১৪ মে ঈদ মেলা আয়োজনের আবেদন করেছেন আব্বাস উদ্দীন একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাচ্চু। তিনি ১০ দিনের জন্য পার্ক ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছেন।

এর আগে বিনা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি কোম্পানি ৭ বছরের পর জাতিসংঘ পার্কটি ইজারা নেওয়ার আবেদন করেছেন। আরও দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে মেলার আয়োজনের জন্য মৌখিক অনুরোধ করা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে তারাও আবেদন করতে পারেন।

সূত্রটি জানায়, মেলার আয়োজনে পার্কে ৩০/৪০টি স্টল বসে। ঈদ, পহেলা বৈশাখসহ মেলা থেকে লাখ লাখ টাকা আয় হয় আয়োজকদের। এ কারণে আওয়ামী লীগের সময় থেকে পার্কটিতে মেলার আয়োজন করতে তৎপর থাকেন কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন।

কেসিসির এস্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দিন বলেন, পার্কটি ইজারা নিতে ৫ জন লিখিতভাবে এবং দুই জন মৌখিকভাবে আবেদন করেছেন। সবাই যার যার পক্ষে জোরালো তদবির করছেন। তদবিরের চাপে কর্মকর্তারা সবাই অস্বস্তি রয়েছেন। ইজারার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, নগরীর প্রাণকেন্দ্রে একমাত্র উন্মুক্ত শিশু পার্কটিতে সব ধরনের বাণিজ্যিক আয়োজন বন্ধ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পার্কে শিশুদের দোলনা, ¯িøপারগুলো সংস্কার, খেলার উপযোগী রাইড আরও বাড়ানো, সারাবছর যাতে পার্কটি খোলা থাকে এবং বিনামূল্যে শিশুরা পার্কের সব খেলনা ব্যবহার করতে পারে-তার দাবি জানাই। এই দাবিতে আমরা শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে কেসিসির প্রশাসকের কাছে যাব।

 

খুলনা গেজেট/হিমালয়




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!