খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত
  কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে নতুন বাংলাদেশ গড়তে আর্থিক ও বিনিয়োগের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

আমি পদত্যাগ করিনি : কুয়েটের উপ-উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম বলেছেন, আমি গতকাল রাত ১০টায় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েছি। তবে কোন কাগজে স্বাক্ষর করিনি। এটা অব্যাহতি হতে পারে। কিন্তু আমি পদত্যাগ করিনি বা আমাকে পদত্যাগ করতে বলাও হয়নি। আমাদেরকে যদি বলতো ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আপনাদেরকে পদত্যাগ করতেই হবে, এটাই একমাত্র সমাধান। তাহলে আমরা পদত্যাগ করতাম। আমি কোন পদত্যাগপত্র পাঠায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগপত্র করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর শেখ শরীফুল আলম এ কথা জানিয়েছেন। পদত্যাগের বিষয়ে জানতে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তিনি বলেন, ইউজিসির টিম গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেছেন। বেশিরভাগ সময় ছাত্রদের সাথে কথা বলেছেন। আমার সাথে কথা বলেছেন বিকাল সাড়ে ৪ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। ১৮ ও ১৯ তারিখের ঘটনা বিষয়ে কথা হয়েছে। তাদের কোন প্রশ্নই আমার কাছে মনে হয়নি যে আমার কোন একটা জায়গা থেকে ত্রুটি বা স্বচ্ছতা, নিষ্ঠার অভাব আছে। প্রতিষ্ঠান বা ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করছি। তবে আমি বুঝতেই পারছি না যে আসলে আমার অপরাধটা কি ?

এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ শরীফুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকগণের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।

বিষয়টি জানার পর অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকা এবং অধিকতর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুয়েটের উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম।

শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর লেখা ওই চিঠিতে অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম লিখিছেন, জুলাই ২০২৪ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখি। পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ২০২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আমাকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। উপ-উপাচার্য পদে যোগদানের পর বিভিন্ন দাপ্তরিক সভা ও সিন্ডিকেটে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাকে কোনো প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি।

চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক উপ-উপাচার্যের সীমিত আকারে প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজ করার যে নীতিমালা ছিল তা গত ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলশ্রুতিতে গত ৪ মাসে প্রশাসনিক কার্যাদি এবং আর্থিক বিলে স্বাক্ষর করতে না দিয়ে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদটি একটি অলংকারিক পদে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে আমি শুধুমাত্র লাইব্রেরি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করি।

শেখ শরীফুল আলম উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে সর্বদা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করেছি। এ অবস্থায় গত রাতে প্রিন্ট/ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মারফত জানতে পারি সরকারের তরফে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাস্তবতা হলো আমি নিজে এখনও আমার অপরাধ সম্পর্কে জানি না এবং আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত ন্যাক্কারজনক হামলার সময়ে ছাত্র ও বহিরাগত সন্ত্রাসী উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি এবং আমার শরীরে ২টি ঢিল/পাটকেল লাগে এবং ছাত্রদের সঙ্গে আমি নিজেও আহত হই। এ ব্যাপারে সাধারণ ছাত্রদের বক্তব্য নেওয়া যেতে পারে ও ঘটনার ফুটেজ দেখা যেতে পারে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়া এবং কোনো অপরাধ/অপকর্ম না করে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি বা অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!