যশোরের চৌগাছায় পারিবারিক দ্বন্দের জেরে স্বামীর বাঁশের আঘাতে স্ত্রী রেকসোনা খাতুন (২৫) খুন হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১০ মার্চ) সকালে উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী ঘটনার সাথে সাথে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের সিজার ওরফে রাকিবের সাথে ১০/১২ বছর আগে পেটভরা গ্রামের নাজমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রথম স্ত্রীর পক্ষে একটি ছেলে সন্তান আছে। কিন্তু বিয়ের ৭/৮ বছর পর স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ শুরু হলে স্ত্রী পিতার বাড়ীতে চলে আসে। বর্তমানে নাজমা খাতুন ঢাকায় থাকেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে দূরত্ব হবার কারনে সিজার ওরফে রাকিব কয়েক বছর আগে উপজেলা আন্দুলিয়া গ্রামে রেকসোনা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছুদিন তাদের সংসার ভালো চলছিল বলে গ্রামের কায়েজন জানান। কিন্তু পরবর্তীতে প্রথম পক্ষের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রেকসোনার সাথে মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাটি ও কথা কাটাকাটি হতো। এতে পরিবারে দেখা দেয় অশান্তি।
ঘটনার দিন সোমবার সাকল ৮ টায় প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে পুনরায় স্বামীর সাথে রেকসোনার ঝড়ড়া শুরু হয়। একপর্যায় দুজনার মধ্যে ব্যাপক কথাকাটি শুরু হলে স্বামী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় বাড়িতে রাখা বাঁশ দিয়ে স্ত্রীকে মারপিট করতে থাকে। ঠেকাতে গিয়ে রেকসোনা হাতেও আঘাত প্রাপ্ত হন। এছাড়া কানের উপরিভাবে ও চোখে উপরে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি। আঘাতে স্ত্রী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই রেকসোনার মৃত্যু হয়।
গ্রামের চৌকিদার জামাত আলী জানান, প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝসড়াঝাটি হয়। বাঁশের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন বাঁশের লাঠি নয়। ৫/৬ ফিট কেটে রাখ বাঁশ দিয়ে মারা হয়েছে বলে আমি জেনেছি।
নারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীন জানান, সকালে শুনলাম মার্ডার হয়েছে। যতদূর যেনেছি, পারিবারিক ঝামেলার কারনে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ও নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছে। তবে তাকে দ্রুত আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গতঃ গত শনিবার ভোরে উপজেলার পাতিবিলা গ্রামে ছেলের হাতে বাবা খুন হন। দু’দিনের ব্যবধানে আরো একটি হত্যা সংঘঠিত হলো।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা জানান, সামাজিক এবং পারিবারিক বন্ধন অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। একে অপারের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধাবোধ উঠে গেছে। সামাজিক অবক্ষয়ের কারনে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। সুশিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষা ছাড়া এ থেকে পরিত্রাণ নেই বলেও মতামত দেন তারা।
খুলনা গেজেট/এএজে