আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিপাদ্য বিষয় ‘উদ্ভাবনায় বন, সম্ভাবনায় বন’ এবং স্থানীয়ভাবে ‘হাতে হাত ধরো, এসো বাঁচাই সুন্দরবন, করবো বন সংরক্ষণ, সুস্থ থাকবো সারাক্ষণ’ এ প্রতিপাদ্যের আলোকে সংগঠনের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও খুলনা শাখার সমন্বয়কারী অ্যাড. মোঃ বাবুল হাওলাদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, জাতীয় পার্টি নেতা শাহ্ মোঃ লায়েক উল্লাহ্, সুন্দরবন-নদী সংরক্ষণ ও দক্ষিণবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল তারেক তুষার, খ ম শাহীন হোসেন, আরেফীন কবির, আব্দুল্লাহ আল লালী, হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
আলোচনা বক্তারা বলেন, দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ, পাহাড়ী ও সমতলের সকল বন এবং উপকূলের প্যারাবন রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। বক্তারা সামাজিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, বন-জঙ্গল, জলাবায়ু পরিবর্তনজনিত নেতিবাচক প্রভাবে উষ্ণায়ন, সাইক্লোন, টর্নেডোর মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে যেমন রক্ষা করে, তেমনি অক্সিজেন ভা-ার হিসেবে অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে থাকে। বন পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-ওষুধ ইত্যাদি তৈরির কাঁচামালের উৎস হিসেবেও বনের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। বন অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। একটি দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় ন্যূনতম ২৫ ভাগ বনায়ন প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে বনের পরিমাণ ৯-১২ ভাগ। বিশেষত অপরিকল্পিত এবং পরিবেশ অসম্মত নগরায়নের ফলে বনভূমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এর নেতিবাচক প্রভাবে বাংলাদেশে অনেক ঋতুই হারিয়ে যাচ্ছে। অসময়ে শীত, অতিরিক্ত তাপদাহ, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, খরা দেখা দিচ্ছে। যে কারণে মানুষের সুস্থ-সুন্দর জীবনের স্বার্থেই বন সংরক্ষণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায়ে বৃক্ষরোপণ এবং পরিচর্যার মাধ্যমে সর্বত্র সাধ্যমত বনায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে সর্বস্তরের মানুষকে বিশেষ করে সরকারি উদ্যোগে ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
বক্তারা উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নির্বিচারে গাছ নিধনে বিরত থেকে গাছ বাঁচিয়ে কিভাবে পরিবেশসম্মত, টেকসই উন্নয়ন করা যায় সরকারকে সে বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করার আহ্বান জানান।
খুলনা গেজেট/কেডি