খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত

বিএনপির প্রথমসারির ৫ জনসহ একদিনে ১৩৬ নেতাকর্মীর সাজা

গেজেট ডেস্ক

পুলিশের কাজে বাধা ও নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির সম্মুখসারির পাঁচজন নেতাসহ ১৩৬ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সম্মুখসারির পাঁচজন নেতার মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে দুই মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ ১৩২ জনকে বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের পৃথক আদালত এসব মামলার রায় ঘোষণা করেন।

পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ২৫ জনের দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি আকরামুল হাসান মিন্টু, হাবিবুর রশিদ হাবিব ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি এনামুল হক এনাম। এছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১২ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আসামিরা ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেন ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় পল্টন মডেল থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির হরতাল-অবরোধ চলাকালে নিউমার্কেট ও নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ ১৪ জনকে দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। এরমধ্যে দণ্ডবিধি ১৪৩ ধারায় আসামিদের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিরা পলাতক।

২০১৩ সালে রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাশকতার মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ বিএনপির সাত কর্মীকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও সাত মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- সাজেদুল ইসলাম সুমন, গান্ডু শাহিন, বেল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও আবু বক্কর সিদ্দিক। আসামিদের মধ্যে নীরব কারাগারে, বাকিরা পলাতক।

জানা যায়, ২০১৩ সালের মে মাসে বিএনপির হরতাল অবরোধ চলাকালে রাজধানীর তেজগাঁও থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। মামলার পর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

রাজধানীর বংশালে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬২ নেতাকর্মীকে সাড়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খন্দকার আখতার হামিদ খান পবন। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নবাব কাটরা নিমতলীর এলাকার হোটেল সুফিয়ার সামনে দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বংশাল থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

চকবাজার থানার মামলায় বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মীকে ২ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বিএনপিকর্মী রফিকুল ইসলাম রাসেল, ইমরান আহমেদ রনি, ইরফান, ফরহাদ উল্লাহ বান্টি, হাজী আব্দুল রাজ্জাক, রুবেল, আনোয়ার হোসেন রনি, জিয়াউল হক জনি, হাজী কামাল ওরফে কামাল উদ্দিন ঝন্টু, জাহিদ, আবদুর রহিম উদ্দিন, রাজিব আহম্মেদ, হাজী আবদুর হামিদ, ইমরান ও আজিজুল্লাহ। আসামিরা পলাতক আছেন। জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে চকবাজার এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।

শাহজাহানপুর থানার নাশকতার মামলায় বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর ২ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- হাসানুল হক মাহমুদ ওরফে কাকন, দুলাল বেপারী, ফরহাদুল ইসলাম, আজিজ, শহিদুল্লাহ টিপু, শাহজালাল, সাইদুর রহমান রিপন, হুমায়ুন কবীর নাহিদ, স্বপন ভুঁইয়া, জাহাঙ্গীর, শরিফুল ইসলাম, মনসুর, কসাই হোসেন, হাবু, আব্দুল্লাহ জামান ও সোহাগ ভূঁইয়া। আসামিরা সবাই পলাতক আছেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শাহজাহানপুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।

২০১৩ সালের এপ্রিলে পল্টন থানার মামলায় মেহেদী হাসান এক বিএনপি কর্মীকে দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারায় ২ বছরের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুব এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে পল্টন থানা এলাকায় নাশকতা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!