সাতক্ষীরায় চাঁদাবাজী ও এক অসহায় ভ্যান চালকের বসত ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানসহ তিনজনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে।
বাঁশদহা ইউনিয়নের পাঁচরখি গ্রামের মৃত আব্দুস সুফিয়ান গাজীর ছেলে গোলাম সরোয়ার বাদী হয়ে সোমবার (১৩ নভেম্বর) সাতক্ষীরার আদালতে মামলাটি করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের পাঁচরখি গ্রামের মৃত মফজুলার রহমান খোকনের ছেলে বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, তার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহযোগী একই গ্রামের জোহর আলীর ছেলে ইকরা।
গোলাম ছরোয়ার মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন, বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই মোস্তাফিজুর রহমানের একটি গরুর খামার ছিল। ওই খামারে মাসিক বেতনে চাকরি করতেন গোলাম সরোয়ার। চাকরি করাকালীন সময়ে হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর থেকে ওই খামারে আর কাজ করতে পারেননি তিনি। খামারে কাজ না করার আক্রোশে মফিজুর রহমান, তার ভাই মোস্তাফিজুর রহামান ও ইকরাসহ আরও ৪/৫ জন গোলাম সরোয়ারকে রাস্তায় আটকে পৃথকভাবে সাদা ও হলুদ কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। গোলাম সরোয়ার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানালে মফিজুর রহমান ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গোলাম সরোয়ারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। এরপর গোলাম সরোয়ার বাড়ি হতে ঢাকায় চলে যান। তখন মোস্তাফিজুর রহমান গত বছরের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাবেন মর্মে গোলাম সরোয়ারকে উকিল নোটিশ পাঠান।
এ ঘটনার পর গোলাম সরোয়ার ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরে আসলে গত ২৪ এপ্রিল সকালে গোলাম সরোয়ারের বাড়িতে যেয়ে মফিজুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইকরাসহ ৪/৫ জন ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে খুন জখমসহ ক্রস ফায়ারের হুমকি দেন। গোলাম সরোয়ার এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে মফিজুর রহমান দুটি বসত ঘরে ৪টি তালা লাগিয়ে দেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যান। এরপর গোলাম সরোয়ার ৯৯৯ এ কল করে থানাকে অবহিত করলে রাত ১০টার দিকে কয়েকজন মেম্বর ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তি এসে তালা খুলে দেন। তখন গোলাম সরোয়ারসহ তার পরিবারের সদস্যরা ঘরে ঢোকেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অসীম কুমার মন্ডল বলেন, চাঁদাবাজী, অন্যের বসতঘরে অনধিকার প্রবেশসহ নানা অভিযোগে মফিজুর রহমানসহ ৩ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আমলী-১ আদালতের বিচারক জিয়াউল হক মামলাটি আমলে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বলেন, মামলা হয়েছে কি না জানি না। যদি হয়ে থাকে তবে তা মিথ্যা।
খুলনা গেজেট/এনএম