দীর্ঘ ৫৮ বছর পর সীমান্ত নদী ইছামতী, কালিন্দী ও কাকশিয়ালী এই তিন নদীর মোহনায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় পুনরায় চালু হত যাচ্ছে নৌ-বন্দর। আজ সোমবার (১৩ নম্বেবর) খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানের অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন স্থাপনা উদ্বোধনের অংশ হিসেবে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের বহুপ্রতিক্ষিত এই নৌ বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের খুলনা অঞ্চল নৌ বন্দরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরই মধ্যে বন্দরের জন্য বসন্তপুরে নির্ধারিত স্থানে ভিত্তি প্রস্তর ফলক নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
সাতক্ষীরা সীমান্তের ইছামতী, কালিন্দী ও কাকশিয়ালী নদীর মোহনায় অবস্থিত সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বসন্তপুর গ্রাম। দীর্ঘ ৫৮ বছর আগেও এ গ্রামে ছিল সমৃদ্ধ নৌবন্দর। এই নৌবন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য হতো বাংলাদেশের। তখন বসন্তপুর ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করা যেত। এছাড়া সাতক্ষীরায় উৎপাদিত ধান, মাছ, কাঠ ও কাঠের তৈরি সামগ্রীসহ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হতো। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর এই বন্দরটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমান সরকারের আমলে বন্দরটির কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে বিশেষ উদ্যোগ নেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। নৌ বন্দরটি পুনপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাকে আহ্বায়ক করে বসন্তপুর নদী বন্দর বিষয়ক একটি সাব কমিটিও গঠন করে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ। সেই থেকে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের স্মৃতি বিজড়িত সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় নৌ বন্দর পুনপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেন।
শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, সাতক্ষীরার উন্নয়নে কিছু করার তাড়না থেকে কালিগঞ্জের বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি চালুর উদ্যোগ মাথায় আসে। এজন্য ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করি। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বন্দরটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বসন্তপুর বন্দর’ ঘোষণা দেওয়া হয়। যা আজ ১৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা উদ্বোধন করবেন। বন্দরটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। এলকার বহু বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
বসন্তপুর নদী বন্দর বিষয়ক সাব কমিটির সদস্য, কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, বসন্তপুর নদী বন্দর কালিগঞ্জ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী। এই নদী বন্দর পুনরায় চালু করায় এখানকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা বদলে যাবে। মানুষের কর্মসংস্থান হবে। জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ১৩ নভেম্বর খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে ভার্চুয়ালি কালিগঞ্জের বসন্তপুর নৌ বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তরের উদ্বোধন করবেন।
খুলনা গেজেট/ এএজে