শনিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতারও দাবি জানিয়েছে তারা। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ভোটার, রাজনৈতিক দলগুলো, সরকার, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, নাগরিক সমাজ, মিডিয়াসহ সবার দায়িত্ব রয়েছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংকালে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি ও অন্য একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে আমরা তার নিন্দা জানাই। একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মী, হাসপাতাল-বাস পোড়ানো এবং সাংবাদিকসহ বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য।
তার কাছে সাংবাদিক মুশফিক জানতে চান, বাংলাদেশে বিরোধীদের মহাসমাবেশে হামলা এবং সহিংসতা নিয়ে সপ্তাহান্তে আপনি যে বিবৃতি দিয়েছেন আমরা তা দেখেছি। এই সহিংসতা মূলত সমাবেশের বাইরে থেকে সংঘটিত হয়েছে।
মহাসমাবেশ শুরুর পরপরই তা ভণ্ডুল করে দিতে এই সহিংসতা করেছে পুলিশ। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ইন্টারনেট।
তারপর থেকে বিরোধী দলীয় কয়েক শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিরোধী দলীয় নেতাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের বিরুদ্ধে শত মামলা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কি? এমন প্রশ্নে ম্যাথিউ মিলার ওই মন্তব্য করেন।
এরপর মুশফিক জানতে চান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিরোধী দলীয় নেতা ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের সঙ্গে মিটিং করার কারণে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছে সরকারপন্থি মিডিয়াগুলো এবং তাদের সমর্থকরা। এসব রিপোর্ট এ কথাই বলে যে, শাসকগোষ্ঠী মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে।
বাংলাদেশে মার্কিন কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি কি আপনারা অনুমোদন করেন? এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, নাগরিক সমাজের সংগঠন, মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা, ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নেতারা, সংস্কৃতিতে অবদান রাখা ব্যক্তিরা, শিক্ষাবিদ, অন্য বিভিন্ন রকম সংগঠন ও ব্যক্তিবিশেষের মতো বিভিন্ন রকমের মানুষের সঙ্গে কূটনীতিকরা কথা বলেন। কূটনীতিকরা তাদের দৈনন্দিন কাজের অংশ হিসেবেই এসব করেন।
এরপর অন্য একজন সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, সরকারের ছত্রছায়ায় তাদের ক্যাডাররা পুলিশের ইউনিফর্ম পরে পেট্রোল বোমা ও গানপাউডার ব্যবহার করে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করেছে। জনগণের ও সরকারি সম্পদ ধ্বংস করেছে।
ক্ষমতাসীনরা বলছেন, এসব হামলা বিরোধী দল চালিয়েছে। গত ১৪ বছর ধরে এভাবেই চলছে। এসবের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয়ার কোনো পরিকল্পনা কি মার্কিন সরকারের আছে? জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আগের প্রশ্নেই আমি যে উত্তর দিয়েছি, তা এখানে প্রযোজ্য। আমি বলবো যে, আমরা এটা পরিষ্কার করেছি বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে প্রয়োজন হলে আমরা পদক্ষেপ নেবো। এই মঞ্চ থেকে কখনো সেগুলো ‘প্রিভিউ’ করবো না।
খুলনা গেজেট/এনএম