শুধু ডেঙ্গু রোগী নয়, সবধরণের রোগীর জন্যও স্যালাইন অপরিহার্য চিকিৎসা। কিন্তু এই স্যালাইনে রয়েছে চরম সংকট। সারা দেশের ন্যায় খুলনা রূপসাতেও স্যালাইন সংকটের কারণে রোগীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। সুযোগ বুঝে ওষুধ বা ফার্মেসি মালিকরাও বেশি দামে বিক্রয় করছে ভোক্তাদের কাছে।
সরেজমিনে জানা যায়, রূপসাসহ আশপাশের উপজেলা গুলোতে সাধারণ কোনো ফার্মেসিতে আইভি স্যালাইন খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই স্যালাইন কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ৪/৫দিন যাবত স্যালাইন না থাকায় সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
নৈহাটির গোডাউন মোড় থেকে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী মিন্টু মোল্লা জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪দিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি আছি। হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন দেয়নি, ২টা স্যালাইন বাইরে থেকে ক্রয় করেছি। এখন বাইরের ফার্মেসিগুলোতেও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না।
ঘাটভোগের পিঠাভোগ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী কিংকর লস্কর জানান, শরীর অনেক দুর্বল। খেতে পারছেন না। প্লাটিলেট আগের তুলনায় বাড়ছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে স্যালাইন দিচ্ছি। হাসপাতাল ও আশপাশের ফার্মেসিগুলোতে স্যালাইন পাওয়া যায়নি।
রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আরাফাত ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মো. হিমু খানসহ বেশ কয়েকটি ফার্মেসির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্যালাইন সংকট রয়েছে বাজারে। কোম্পানিগুলো সাপ্লাই দিতে পারছে না। চাহিদা থাকলেও জোগান নেই পর্যাপ্ত।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণ স্যালাইন শুধু ডেঙ্গুই না সিজার, সার্জারি, ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের সংকটে অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। স্যালাইনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং এর দাম বাড়াতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে বাজার মনিটরিংয়ের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা।
রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পিকিং সিকদার জানান, হাসপাতালে বর্তমান ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১৫ জন। গত মাস থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১০২ জন। হাসপাতালে গত ৪/৫ দিন যাবত আইভি স্যালাইন অর্থাৎ নরমাল স্যালাইন নেই। তাই স্যালাইনের পরিবর্তে ভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু হাসপাতাল নয় বাজারেও স্যালাইন সংকট রয়েছে। জায়গার সমস্যার কারণে কোন ডেঙ্গু কর্নার নেই। পাশাপাশি জনবল সংকটেও রয়েছি আমরা।
খুলনা গেজেট/কেডি