যশোরের লেবুতলায় কিশোর রুবেল হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু কারাদন্ড ও দু’জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং একই সাথে অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি লিটন হোসেন সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। এছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, লিটনের বাবা আব্দুল লতিফ ও শর্শুশুনাদাহ গ্রামের মকবুল বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ইসলাম। রোববার অতিরিক্ত দায়রা জজ তাজুল ইসলাম এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে লতিফ নিহত রুবেলের চাচা, লিটন চাচাতো ভাই ও রফিকুল ইসলাম ফুপাতো ভাই। রুবেলের বাবা লেবুতলার আব্দুল মাজেদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার ছোটভাই আসামি লতিফের বিরোধ চলছিলো। যার সূত্রপাত জমি ভাগাভাগি নিয়ে। এ সূত্র ধরে একদিন লতিফের ছেলে লিটন হোসেন ও তাদের বোনের ছেলে রফিকুল ইসলাম মাজেদ ও তার স্ত্রী এবং সন্তানদের মারপিট করে । এছাড়া মাজেদের পরিবারকে জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য হত্যার হুমকি দেয়। এরই মাঝে ২০০৫ সালের ১৬ জুন রাত সাড়ে আটটার দিকে বাথরুমে যাওয়ার জন্য রুবেল ঘর থেকে বাইরে যায়। কিন্তু রুবেল আর ফিরে আসে না। পরে পরিবার বিভিন্ন স্থানে খুজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন সকাল ১১ টায় রুবেলদের বাড়ির পেছনের বাগানের একটি গর্ত থেকে রুবেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রুবেলের বাবা ১৭ জুন কোতোয়ালি থানায় ওই তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় আটক হয় আসামিরা। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে হত্যা করে লাশ গর্তে ফেলে দেয়। কোতোয়ালি থানার এসআই মিজামুল হক মামলাটি তদন্ত করে ২০০৬ সালের ৭ আগস্ট আদালতে ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
রোববার এ মামলার রায় ঘোষণার দিনে আসামিদের উপস্থিতিতে লিটনের আমৃত কারাদন্ড ও অপর দুইজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। একই সাথে তিন আসামির প্রত্যেকের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
এদিকে, রায় ঘোষনার পর আদালত চত্বরে আসামির স্বজনরা দাবি করেন, তারা এ রায়ে অসন্তোষ। উচ্চ আদালতে তারা এ রায়ের বিপক্ষে আপিল করবেন।
খুলনা গেজেট/কেডি