খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

সাজা স্থগিত রাহুল গান্ধীর, সাংসদ পদে ফেরার সম্ভাবনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মোদি পদবি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় বড় ধরনের স্বস্তি বয়ে এনেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধীর (৫৩) জন্য। শুক্রবার এক রায়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত রাহুল গান্ধীর সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি পি এস নরসিমহা এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ শুক্রবারের রায়ে রাহুলের দু’বছর কারাবাসের সাজার ওপর স্থগিতাদেশ দেন। রায়ের ঘোষণা বেঞ্চের পক্ষ থেকে বিচারপতি বি আর গাভাই বলেন, ‘পিটিশনার (রাহুল গান্ধী) যখন এ কথা বলেছিলেন, সম্ভবত কোনো কারণে তার মন-মেজাজ তিক্ত ছিল।’

‘আমরা আশা করছি, এখন থেকে যেন বক্তৃতা-বক্তব্য দেওয়ার সময় শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে তিনি সতর্ক থাকবেন। কারণ প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির মনে রাখা উচিত যে সাধারণ ভোটাররা তাদের অনুসরণ করেন।’

সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের সমালোচনা করে বিচারপতি গাভাই আরও বলেন, ‘যে অপরাধে পিটিশনার কে সাজা দেওয়া হয়েছে, তা এ সংক্রান্ত অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা। কী কারণে নিম্ন আদালত সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন, তা সুপ্রিম কোর্টের কাছে এখনও অস্পষ্ট।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘সব চোরের পদবি ‘মোদি’ হয় কেন?’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদি, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় পলাতক আসামি ও ব্যবসায়ী নীরব মোদি সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুলনা টেনেছিলেন তিনি।

ওই মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় গুজরাটের সুরাট জেলার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি।

গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। তবে ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য তাকে ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক।

তারপর গত ৩ এপ্রিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুরাটেরই দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন রাহুল গান্ধী; কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা সেই আবেদন খারিজ করে সাজা কার্যকরের রায় বহাল রাখেন।

এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে রাহুলের আইনজীবী বিএম মঙ্গুকিয়া সুরাট দায়রা আদালতের সাজা কার্যকর করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গুজরাট হাই কোর্টে আপিল করেন।

কিন্তু গত ৭ জুলাই এক রায়ে রাহুলের আবেদন খারিজ করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন গুজরাট হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট তার সিদ্ধান্ত জানানোর পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন রাহুল গান্ধী। শুক্রবার সেই আবেদনের রায় জানালেন সর্বোচ্চ আদালত।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর রাহুল গান্ধীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে দিল্লি কংগ্রেসের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে এই রায় উদযাপন করেছেন।

ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানিয়েছেন, রাহুলের সংসদ সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য শিগগিরিই স্পিকার বরাবর আবেদন করবে দল।

রয়টার্সকে অধীর বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে যে মিথ্যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল, তা থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। সত্যের জয় হয়েছে….এবং সামনের দিনে নরেন্দ্র মোদিকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।’ সূত্র : রয়টার্স।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!