সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ৭নং মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অসীম মৃধার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন ওই পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্য। রোববার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টায় ইউপি সদস্যগণ নিজ নিজ স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে দায়ের করেছেন।
অভিযোগ মতে, ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা ইউপি সদস্যদের কোন পরামর্শ না নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতাভাবে নিজের ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদ হতে সরকারি কোন সুবিধা পেতে হলে তাকে ঘুষ দিতে হবে। যেমন- টিআর কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য শতকরা ১ ভাগের বরাদ্দ এবং উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দ নিতে হলে তাকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়।
জনগণের ব্যবহারের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ বা এনজিও কর্তৃক বরাদ্দ সুপেয় পানির ড্রাম ও টিউবওয়েল নিতে হলে ১৫ হাজার, ভিডব্লিউবি/শিশু কার্ডের জন্য ৭ হাজার, রেশন কার্ড/খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর কার্ড নিতে হলে ৫ হাজার, গর্ভকালীন ভাতা ৫ হাজার, টিসিবি পন্য কার্ড ২ হাজার, বয়স্কভাতা কার্ড ৩ হাজার, বিধবা ভাতা কার্ড ৩ হাজার, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ৩ হাজার, ভূমি প্রত্যয়নপত্র ৩ হাজার, জেলে বাওয়ালী কার্ড ২ হাজার, জন্ম নিবন্ধন ফি ২৫০, ওয়ারেশ কায়েম সনদ ২ শত এবং ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৯২০ টাকা আদায় করে যতসামান্য সরকারি খাতে জমা দিয়ে বাদবাকি টাকা একাই আত্মসাৎ করেন।
রাস্তার পাশে মাটি ভরাট করার জন্য মহিলা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে মাথাপিছু ৩০ হাজার টাকা এবং জোনিং সিস্টেমের নাম করে ঘের মালিকদের নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকেন চেয়ারম্যান। আমরা এসবের প্রতিবাদ করলে ক্ষমতার দাপটে আমাদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। তাছাড়া ইউপি সদস্যদের সম্মানি ভাতা প্রদান না করে তিনি একাই আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যান অসীম মৃধার দূর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা অবসানের জন্য ১০ জন ইউপি সদস্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাদের আবেদনপত্রে।
তবে মেম্বারদের করা সব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা বলেন, অবৈধ সুযোগ সুবিধা না পেয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন। তিনি আইনগতভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আক্তার হোসেন ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম