দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে মির্জা ফখরুল ‘কুত্তা মার্কা’ বলেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বিএনপির মহাসচিবকে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগ আয়োজিত তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
চট্টগ্রামে বুধবার বিএনপির এক সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় সরকারের হাঁটু কাঁপতে শুরু করেছে। এবার ‘কুত্তা মার্কা নির্বাচন’ করলে রেহাই নেই।
ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি মহাসচিবের কী বিশ্রী মন্তব্য, বিষাক্ত কথা! কী করে বের হয়? দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে বলে ‘কুত্তা মার্কা নির্বাচন’।
“তিনি কি গাজীপুর, বরিশাল, খুলনা, কক্সবাজারের নির্বাচন দেখেননি? সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিএনপি বলে ‘কুত্তা মার্কা নির্বাচন’।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ শব্দ ব্যবহার করার পরও মার্কিন ভিসা নীতি এখানে কী করবে? এটা তো সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা।’
ওই সময় নির্বাচন নিয়ে বক্তব্যের জন্য মির্জা ফখরুলকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন কাদের।
চট্টগ্রামে বিএনপি বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘যারা বিদেশ থেকে কথা বলছেন, এই ঘটনায় তারা কী ব্যবস্থা নেয়? এটা কি সুষ্ঠু নির্বাচনে অন্তরায় নয়? এটা কারা করেছে? বিএনপি ও তার দোসররা।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করবে। গ্রেপ্তার করা হলে বলবেন মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। বিনা বিচারে আটক, অভিযোগের অন্ত নেই।’
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি উপর্যুপরি আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় মরহুম ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপিকে বলেছিলেন, হাঁটুভাঙা দল। আমাদের হাঁটু ভাঙেনি। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপির হাঁটুর কাঁপুনিও শুরু হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ কাউকে ভয় পায় না মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কাউকে ভয় পায় না, আমাদের ঈমানের শক্তি আছে, দেশপ্রেম আছে। আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস এ দেশের জনগণ।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা রাজনীতির নামে বড় বড় কথা বলে, মিথ্যাচার করে, বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বাংলাদেশ যাতে আরও কষ্টে নিপতিত হয়, যাতে বাংলাদেশ সক্ষমতার সাথে চলতে না পারে। আজকে বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের বাইরে থেকেও খেলা চলছে। চক্রান্ত চলছে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করছে। ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের সে অর্থ আছে।
‘লবিস্ট নিয়োগ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয়জন সদস্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জন কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। দেশটা আমাদের, মাথাব্যথা তাদের।’
কাদের ওই সময় বলেন, ‘কেউ কেউ মনকলা খাচ্ছে, এই বুঝি নিষেধাজ্ঞা এলো; ভিসা নীতিতে পড়ল আওয়ামী লীগ সরকার। ফখরুল তো দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখছে।’
রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার মানবিক কারণে তাদের পাশে আছে। আমাদের সংকটের মধ্যেও ১২ লাখ রোহিঙ্গার খাওয়া-দাওযার দায়িত্ব নিতে হয়েছে। জাতিসংঘ এদের ভরণপোষণের প্রয়োজনীয় ফান্ড দিতে পারছে না বলে অপরাগতা প্রকাশ করেছে। ফান্ড ইতোমধ্যে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
‘আজকে যারা বড় বড় কথা বলেন, তারা কি এটা জানেন না? এ সংকটে ১২ লাখ লোকের দায়িত্ব আমরা কীভাবে পালন করব?’
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ কৃষক লীগ নেতারা।
পরে কৃষক লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
খুলনা গেজেট/এনএম