মরক্কো ২ : ১ ব্রাজিল
যেন কাতার বিশ্বকাপের ঘোরই এখনো কাটেনি। মরক্কোর ঘোর, একের পর এক চমক দেখিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ার। আর ব্রাজিলের ঘোর, বড় স্বপ্ন নিয়ে এসে মাঝপথ থেকে দুঃস্বপ্ন নিয়ে বিদায়ের।
কাতারের সেই ঘোরের বৃত্তে বন্দি থেকে আজ মরক্কোর কাছে হেরে গেছে ব্রাজিল। তাঞ্জিয়ারে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আফ্রিকান দলটির কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
মরক্কোর হয়ে গোল করেন সোফিয়ান বুফাল ও আবদেলহামিদ সাবিরি। ব্রাজিলের হয়ে এক গোল শোধ দেন অধিনায়ক কাসেমিরো।
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর এটি ছিল ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ। ছয় বছর ডাগআউটে দায়িত্ব পালন করা তিতের বিদায় আর চোটে আক্রান্ত নেইমার ও থিয়াগো সিলভাবিহীন ব্রাজিলের শুরুর একাদশ ছিল তারুণ্যেভরা।
ভারপ্রাপ্ত কোচ রেমন মেনেজেস আজ আন্তর্জাতিক অভিষেক করিয়েছেন সম্ভাবনাময়ী পাঁচ তরুণকে। আরেকটা কারণেও মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বিশেষ। কিংবদন্তি পেলের মৃত্যুর পর এই প্রথম ব্রাজিলের মাঠে নামা। ম্যাচের শুরুতে পেলেকে স্মরণ আর প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জার্সিও পেছনে ছিল ফুটবল-রাজার নাম। কিন্তু এ সব উপলক্ষ্যের কোনোটিই যে ব্রাজিলকে উদ্দীপিত করতে পারেনি, তা স্কোরলাইনেই স্পষ্ট।
শুরু থেকেই ব্রাজিলের তুলনায় গতিসম্পন্ন ছিল মরক্কো। বল ব্রাজিলিয়ানদের পাঁয়ে থাকলে কেড়ে নেওয়ার প্রবল চেষ্টা আর দ্রুত আক্রমণে ওঠার প্রবণতা দেখা গেছে প্রথম থেকেই। এ জন্য মাঝ মাঠে ঝামেলা বেঁধেছে একাধিকবার।
ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ তৈরি করে অবশ্য ব্রাজিল। ১৩ মিনিটে লুকাস পাকেতার থ্রু বল খুঁজে নিয়েছিল রনিকে, তবে কাছ থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ২৪ মিনিটে মরক্কো গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুর ভুলে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল ব্রাজিল। আন্দ্রে সান্তোসের শট এগিয়ে আসা বুনুর হাত ফসকে পেছনে গোলমুখের দিকে চলে যাচ্ছিল। শেষমুহূর্তে পেছনে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রনে নেন তিনি।
এর দুই মিনিট পরই অবশ্য বল জালে পাঠান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে আক্রমণ তৈরির সময় অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়।
২৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায় মরক্কো। বিলাল এল খাননুসের কাছ থেকে বল নিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন বুফাল। ৩৬ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ ছিল রদ্রিগোর সামনে। নেইমারের অনুপস্থিতিতে দশ নম্বর জার্সি পরা এই ফরোয়ার্ড কাছ থেকে নেওয়া শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
ব্রাজিলকে গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয় ম্যাচের ৬৭ মিনিট পর্যন্ত। তাও মরক্কো গোলরক্ষকের ভুলের সুবাদে। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া কাসেমিরোর শট বুনুর নাগালেই ছিল। ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পেলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল তাঁর শরীরের নিচ দিয়ে দিক পাল্টে জালে জড়িয়ে যায়।
সমতার পর মরক্কোর আক্রমণ আরও গতি পায়। সেই ধারয় ৭৯ মিনিটে চলে আসে গোলও। ওয়ালিদ ছেদদিরার কাছ থেকে বল পেয়ে হাফ-ভলিতে বল জালে পাঠিয়ে দেন সাবিরি। গোলরক্ষক ওয়েভারতনের দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
ম্যাচের বাকি সময়ে আর গোল করতে পারেনি ব্রাজিল। ভারপ্রাপ্ত কোচ মেনেজেসের প্রথম ম্যাচটা শেষ হয় হতাশায়।