সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা উন্নত জাতের কুল ও পেয়ারা চাষ করে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছেন। ফলে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য দেখছেন চাষী ও কৃষি দপ্তর।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবুল হোসেন মিয়া জানান, এ বছর কলারোয়া উপজেলায় ৩’শ ১৬হেক্টর জমিতে কুলের চাষাবাদ হয়েছে। তিনি আরো জানান-কুল চাষ এ অঞ্চলে নিয়মিত অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্থকারী ফসল। যা কৃষি ক্ষেত্রে এনে দিয়েছে নীবর বিপ্লব।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এখানকার মাটি দো-আঁশ। যা কুল চাষের জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী। অপরদিকে বর্তমান সময়ে
প্রচলিত বিভিন্ন ফসল চাষে আর্থিকভাবে কৃষকরা বেশি লাভবান না হওয়ায় তারা ওইসব ফসলের বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছেন কুল চাষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বিঘা প্রতি ১শ’৫০ থেকে ১শ’৭০ মণ কুল উৎপাদন হয়। তাদের মতে, কলারোয়ার কৃষকরা কুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকেন। একই সাথে কৃষকরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানকার কুল বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।
সরেজমিন মঙ্গলবার (১৭জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের কুলে ছেয়ে গেছে বাগান।
উপজেলার হেলাতলা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে স্থানীয় বিভিন্ন জাতের কুল ছাড়াও উন্নত জাতের বল সুন্দরী, বাউকুল, টক কুল, থাই আপেল চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এর মধ্যে আপেল ও বল সুন্দরী কুল বেশি সমাদৃত। তিনি বলেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ, সার-বীজ আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে ধারণা পেলে কুল চাষে আগামীতে আরো বিপ্লব সাধিত হবে। তিনি এ বছর ৬ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে জানান। কুল চাষের জমি দেখাশুনা করেন তিনি ও তার কলেজ পড়–য়া পুত্র ইমরান হুসাইন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হোসেন মিয়া বলেন, কলারোয়ার মাটি কুল চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হওয়ায় বর্তমানে এখানকার কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
তার মতে, ক্যালরিসম্পন্ন কুলের গবেষণা চালিয়ে উন্নত জাত তৈরি করে ব্যাপক আবাদের ব্যবস্থা করলে কলারোয়ায় প্রধান অর্থকরী ফসল আমের পরেই হবে কুলের স্থান। যা বিদেশে রফতানি করে অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে। বতমানে কলারোয়ার কুল এলাকার চাহিদা পূরণের পাশা-পাশি প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করা
হচ্ছে।