খুলনা থেকে আবেদন করেন ১৩ হাজার ৩৭৬ প্রার্থী। আর শুক্রবার পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ৪ হাজার ৭৭৩ জন। শতকরা হিসেবে এটি ৩৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। খুলনা শহরের ১৩টি কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এ দিন আবার অনুষ্ঠিত হয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) নিয়োগ পরীক্ষা। সে পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল দুই তৃতীয়াংশ।
সকাল ১০টা হতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এমসিকিউ পদ্ধতিতে ৭০ মার্কের ওই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৬তম গ্রেডভুক্ত তৃতীয় শ্রেণির সমাজকর্মী পদে জনবল নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ৯ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। তাতে খুলনা থেকে আবেদন করেন ১৩ হাজার ৩৭৬ প্রার্থী। আর শুক্রবার পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ৪ হাজার ৭৭৩ জন। শতকরা হিসেবে এটি ৩৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। খুলনা শহরের ১৩টি কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ না নিতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক পরীক্ষার্থী।
রিয়াছাদ নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমি চার বছর আগে আবেদন করেছিলাম। আমার বাড়ি ডুমুরিয়ার আঠারো মাইল এলাকায়। বাস বন্ধ থাকায় আমি সঠিক সময়ে এসে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারিনি। চার বছর আগে এই পরীক্ষায় আবেদন করেছিলাম। আমার বয়সও শেষ, নতুন করে কোনো চাকরির পরীক্ষায় আবেদনও করতে পারব না। শেষ সুযোগটাও হারালাম।’
খুলনার পাইকগাছার পরীক্ষার্থী শাহানা পারভীন বলেন, ‘আমি পরীক্ষার জন্য বেশ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। খুলনাতে বাস বন্ধ থাকায় আর পরীক্ষা দিতে যাওয়া হয়নি।
অন্যদিকে যারা আগে থেকে শহরে এসে চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাদেরও বাড়িতে ফিরতে ভোগান্তি হচ্ছে নানা রকমের।
একশ’ কিলোমিটার দূরের কয়রা থেকে খুলনায় নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের হলে ৩০ জনের স্থলে মাত্র ৯ জন পরিক্ষা দিয়েছে। একদিন আগে এসে পরিক্ষা দিয়েছি। আজ বাড়ি ফিরে যেতে পারিনি। অন্তত পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এ দিনটাতে বাস বন্ধ না করলেই পারত।
অর্ণব মণ্ডল নামের আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কয়ারাতে। খুলনা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। গতকাল খুলনাতে এসেছিলাম। আজ সকালে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি। তবে এখন যেতে পারছি না। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি বাস চলছে না। তাই ভাবলাম লঞ্চে যাব। কিন্তু সেখানেও গিয়ে দেখি লঞ্চ চলছে না।’
খুলনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কোনো প্রকার ঝালেমা ছাড়া আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩টির মধ্যে একটি কেন্দ্রেও কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘একযোগে বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় এই পরীক্ষা হয়েছে। এটা পূর্ব ঘোষিত। খুলনায় বাস বন্ধ হলে আমাদের কিছু করার ছিল না। যারা পরীক্ষার্থী ছিল তাদের উচিত ছিল অন্তত একদিন আগে শহরে চলে আসার।’
এদিকে নিজস্ব প্রতবেদক, বাগেরহাট থেকে জানান, পরিবহন নেতাদের ডাকে চলমান ধর্মঘটের মধ্যেই সারাদেশের মত বাগেরহাটে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ভোর থেকে পরিবহন বন্ধ থাকায় পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে পারেনি অনেক নিয়োগ প্রত্যাশী। যানবাহন না পাওয়ায় মাত্র ৩৪ ভাগ পরীক্ষার্থী এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। প্রায় ৬৬ ভাগ পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে আসতে পারেনি বলে জানিয়েছেন পরীক্ষার্থী ও স্বজনরা।