আত্মীয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কয়রায় এসে জানাযা নামাজে অংশ নিয়েছিলেন খুলনার জোড়াগেটর বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার। রাত যাপন করেন আত্মীয় বাড়ি। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে আবারও সংবাদ আসে প্রতিবেশীর সাথে তার পরিবারের ঝামেলা শুরু হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে আত্মীয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন বাড়ির উদ্দেশ্যে। কয়রা বাসস্টান্ডে এসে দেখেন বাস বন্ধ। কয়রা থেকে খুলনার দূরত্ব একশ’ কিলোমিটার। ভ্যান, ইজিবাইক, নছিমন, টমটমও চলছেনা, তার বাড়িতে পৌঁছাতে হবে। নিরুপয় হয়ে ভাড়ায় চালিত একটা মোটর সাইকেল ড্রাইভারের সাথে কথা বলেন। তবে তিনি পাইকগাছা উপজেলা পর্যন্ত যেতে চান, তবে ভাড়া দ্বিগুন। কোন উপায় না পেয়ে কয়রা বাস স্টান্ডে বসে আছেন তিনি।
ল্যাবএ্যইড ফার্মসিটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি মোঃ নাইম হাওলাদার। বৃহস্পতিবার তার কোম্পানির ঔষধ খুলনা থেকে বিভিন্ন ফার্মেসিতে দিতে দিতে যখন কয়রায় পৌঁছান তখন সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাতে কয়রা সদরে একটা আবাসিক হোটেলে ছিলেন। সকালে টাকা কালেকশন করে খুলনা ফিরবেন, তবে পরিবহন ধর্মঘট চলায় তিনিও বিপাকে পড়েছেন। কোন গাড়ি না চলায় তিনিও কয়রা বাসস্টান্ডে অপেক্ষা করছেন।
শুক্রবার ভোর থেকে কয়রা উপজেলা থেকে জেলা শহর খুলনার সাথে সকল প্রকার যানবাহন ও নৌ-পথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ।
এদিকে, কয়রা উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ ২২ অক্টোবর দুপুরে খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যেতে বাঁধাগ্রস্ত করতেই গণপরিবহন ধর্মঘট করা হয়েছে। আজ সকাল থেকেও দক্ষিণাঞ্চলের রুটে নৌপথেও চলছেনা কোন লঞ্চ। সমাবেশে যেতে আগ্রহী কয়রা উপজেলা বিএনপির নেত-কর্মীরাও পড়েছে বিপাকে। সকল প্রকার গাড়ি ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় তারা বিকল্পভাবে সমাবেশে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কয়রা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক এমএ হাসান বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ বানচাল করতে গণপরিবহন, লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আমাদের গণসমাবেশ সফল করতে যে কোন মূল্যে অংশ নিবো ইনশাল্লাহ। তিনি আরও বলেন, গণপরিবহন বন্ধ করে সাধারণ মানুকে হয়রানি করা হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কোন বাধাই আমাদের সমাবেশে যাওয়া আটকাতে পারবে না। বাস-লঞ্চ বন্ধ রেখে শুধু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগে ফেলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই