মৌলিক গণতন্ত্র পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত খুলনা জেলা পরিষদের নির্বাচন পরবর্তী তাপ-উত্তাপ নেই। মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদের দর্শনে বিশ্বাসীদের হিসেব-নিকেশের ফলাফলের এসেছে দশ কারণে চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম মোর্তজা রশিদী দারার সমর্থন বেড়েছে। এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে শাসক দলের জেলা বলয়ে সন্দেহের সৃষ্টি এবং নতুন উপদলের ভ্রুণ তৈরী হচ্ছে।
সোমবার অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদের নির্বাচনে শাসক দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ হারুনুর রশিদ ৫৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পাঁচ বছর আগের নির্বাচনের অজয় সরকারকে পরাজিত করে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক এস এম মোর্তজা রশিদী দারা। তার প্রাপ্ত ভোট ৪০৩। তিনি খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তাফা রশিদী সুজার অনুজ। সাবেক ছাত্রনেতা দারা পূর্ব থেকে দলের কোন সমর্থন আশা করেননি। তিনি বলেছেন জেলা ও নগর কমিটির কাঠামোর মধ্যে নিজে সীমাবদ্ধ নন। ফলে দলের নিয়ম নীতি মানা তার ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য নয়। তিনি গঠনতন্ত্রের সীমারেখার বাইরে রয়েছেন। বিগত দিনের ছাত্র রাজনীতির পরিচিতি ও মোস্তাফা রশিদীর সুজার ইমেজ তার নির্বাচনে বড় অধ্যায় পার করেছে।
জেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী গতকালকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের দর্শনে বিশ্বাসীদের হিসেব-নিকেশে এসেছে চেয়ারম্যান প্রার্থী দারা দৌড়ে অনেক দূর এগিয়েছেন। ১০৩ ভোটের ব্যবধান মৌলিক কোন বিষয় নয়। সাবেক ছাত্রনেতা দারার এত ভোট পাওয়ার পেছনে কারণগুলো হচ্ছে শাসক দলের জেলা ও নগর কমিটির অধিকাংশই পরোক্ষভাবে তাকে সমর্থন দেন, মোস্তফা রশিদী সুজার অনুসারীরা তার পক্ষ নেন, ভিন্ন মতের ভোটারদের সমর্থন পান, বিগত ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যানদের একক সমর্থন, খুলনা ক্লাবের মতবিনিময় সভায় ভোটাদের ওপর চাপ প্রয়োগ, ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোজাফ্ফর রশিদী রেজাকে বক্তৃতা দিয়ে বিব্রত করা অবস্থায় ফেলা, নগরীর দুই একটি অভিজাত পরিবারের পরোক্ষ ভূমিকা, জেলা ও নগর কমিটির পদ বঞ্চিতদের সমর্থন পাওয়া, সাবেক ছাত্রনেতাদের সমর্থন এবং জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে নানা কথা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই জন প্রভাবশালী নেতা জানান, তারা প্রত্যক্ষভাবে দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু ভোটারদের মনোভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ছিলেন না। এছাড়া প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজও কাজ করেছে। দলের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় একটি অংশ শাসক দলের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি। সভা ডেকে মূল্যায়ন করে বর্ণচোরাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এ দুই নেতা অভিমত দিয়েছেন উপদল সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।