আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারি দুই জনই আওয়ামী ঘরনার। এ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতৃবৃন্দরা রয়েছে নিরব ভূমিকায়। এছাড়া আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কোন শরিকদলও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়নি এবার। শেষ মুহুর্ত্বের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্তসময় পার করছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাধারণ সদস্যরা। এদিকে নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন খলিলুল্লাহ ঝড়ু।
সাতক্ষীরায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমান প্রশাসক মোঃ নজরুল ইসলাম। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ছাত্রনেতা ব্যবসায়ি খলিলুল্লাহ ঝড়ু।
প্রার্থীরা ইতিমধ্যে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তাদের সমর্থন লাভের জন্য। কেউ কেউ পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে, আর অপর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ব্যবসায়ি খলিলুল্লাহ ঝড়ু লড়ছেন চিংড়ী মাছ প্রতিক নিয়ে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বর ভোটারদের সাথে মতবিনিময় করে তাদের সমর্থন দাবি করছেন। এসময় তার সাথে জেলা ও উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকছেন। তবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এক হয়ে নজরুল ইসলামকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যবসায়ি খলিলুল্লাহ ঝড়ু। তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার প্রচারণা চালাাচ্ছেন। তবে খলিলুল্লাহ ঝড়ু সাতক্ষীরার দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক ও সাবেক প্রাদেশিক সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা স.ম আলাউদ্দিন হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি হওয়ায় বেকায়দায় আছেন। এছাড়া ঢাকাস্থ সাতক্ষীরা জেলা সমিতির নামে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর কারণে কিছুটা সমালোচনা মুখে পড়েছেন তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের নির্বাচনে জেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বরগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এবার জেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ১০৬১ জন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ জন চেয়ারম্যান ৭টি উপজেলা এবং ২টি পৌরসভার ৭টি ওয়ার্ড মিলে মোট ৭ জন পুরুষ এবং ৩ জন মহিলা (সংরক্ষিত) মেম্বর নির্বাচিত হবেন।
এবিষয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, আমি বিগত সময়ে সফলতার সাথে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। এসময় জেলার বিভিন্ন এলাকায় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নানা ধরণের উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। বিগত সময়ে জেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্যদের যে কোন কাজে তাদেরকে আমি সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি। আমি আশাকরি জনপ্রতিনিধি ভোটাররা এবারও আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা খলিল্লুাহ ঝড়ু বলেন, আমি ১৯৭৫ পরবর্তীতে ৭৮ পর্যন্ত ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছি। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলাম। এবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রার্থী হয়েছি। আমি নিরপেক্ষ প্রার্থী হিসেবেই ভোটে অংশগ্রহণ করছি। তবে নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন খলিলুল্লাহ ঝড়ু।
তবে এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা টাকায় বিক্রি না হয়ে বা কোন অপশক্তির কাছে মাথানত না করে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষের আশা-আঙ্খার ঠিকানা জেলা পরিষদকে কলঙ্কমুক্ত রাখবে এমনই প্রত্যাশা জেলাবাসির।
খুলনা গেজেট/ টি আই