খুলনায় এক মাস ৭ দিনের কন্যা শিশু মারিয়ামকে হত্যা করেছেন পাষন্ড মা। ঘাতক মায়ের নাম রীতা বেগম। শুক্রবার রাতে মারিয়মকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে একটি পুুকুরে ফেলে দেন তিনি। রোববার নিজের কন্যা শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন তিনি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ এর বিচারক নাজমুল কবির তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। ঘাতক রীতা বেগম বটিয়াঘাটা উপজেলার গাওঘরা গ্রামের জনৈক সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো: এনামুল বলেন, বাচ্চাটি জন্ম নেওয়ার পর কান্না কাটি ও অতিরিক্ত পায়খানা করত। এতে বিরক্ত হয় ওই শিশুটির মা। এর আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনায় ছিল তিনি। ঘটনার দিন রাতে শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়ে। সকলের অজান্তে মারিয়মকে ঘর থেকে বের করে পুকুরের দিকে নিয়ে যায়। পরে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।
রাত ১ টার দিকে শিশুটির দাদা ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ছেলে সাইফুলকে ঘুম থেকে উঠান। জিজ্ঞাসা করেন ঘরের দরজা খোলা কেন। এমন প্রশ্নের উত্তর তখন তিনি দিতে পারেননি এবং তখনও তিনি জানেন না যে তার কন্যা শিশুকে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ওই বাড়িতে শুরু হয় হৈচৈ। সকলে খুঁজতে থাকেন মারিয়মকে। পরে ঘরের পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। সারাদিন এ হত্যাকান্ডের বিষয়টি উন্মোচিত করার জন্য চলে নাটকীয়তা। পরবর্তীতে ঘাতক মা রীতা বেগমকে সন্দেহ করা হয়। একসময়ে তিনি হত্যাকান্ডের বিষয়টি সকলের কাছে পরিস্কার করেন। সন্ধ্যায় তাকে বটিয়াঘাটা থানার পুলিশ আটক করে। রাতে সাইফুল বাদী হয়ে রীতা বেগমকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাজালাল বলেন, শুক্রবার ভোর ৬ টা ১০ মিনিটের দিকে মারিয়মের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে থানায় খবর দিলে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ঘাতক রীতা বেগম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তাকে রোববার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
খুলনা গেজেট/এসজেড