পালিয়ে দেশত্যাগের দেড় মাসেরও বেশি সময় পর দেশে ফিরেছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। স্থানীয় সময় শুক্রবার দিনগত রাত ১২টার পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কলম্বোর অদূরে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত ১৩ জুলাইয়ের পর থেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন গোতাবায়া।
রাতে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাকে দেশটির মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদেরা ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। গত প্রায় সাত সপ্তাহ স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছিলেন গোতাবায়া। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে দেশে ফিরেন তিনি।
কলম্বোর ওই বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গোতাবায়া উড়োজাহাজ থেকে নামার সময় ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এসময় বিমানবন্দরে মন্ত্রী-এমপিদের ভিড় লাগে।
দেশটির প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গোতাবায়াকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তার নিরাপত্তার জন্য সেনা ও পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নতুন একটি নিরাপত্তা বলয় প্রস্তুত করা হয়েছে।
দেশজুড়ে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গত ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া গত ১৩ জুলাই গোপনে দেশত্যাগ করে মালদ্বীপ যান। পরদিন ১৪ জুলাই সৌদি আরবের একটি ফ্লাইটে যান সিঙ্গাপুরে। সেদেশের সরকার তাকে ১৪ দিনের স্বল্পমেয়াদি ভিসা বা ‘ভিজিট পাস’ দেয়। তবে সিঙ্গাপুরে প্রবেশের পরই দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি ব্যক্তিগত সফরে গেছেন।
সিঙ্গাপুর থেকেই ১৪ জুলাই নিজের পদত্যাগপত্র দেশে পাঠান গোতাবায়া। ১৫ জুলাই তার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার সংসদ স্পিকার।
অনেক দিন ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চোরাস্রোত বইছিল। চলতি বছরের শুরু থেকে সে সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। দেশটির সাধারণ মানুষ এ অবস্থার জন্য রাজাপাকসে পরিবারকে দায়ী করে আসছে। জনরোষের মুখে গোতাবায়ার আগেই তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়েছিলেন। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্ট ভবন ঘেরাও করলে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় দেশ ছাড়েন গোতাবায়া। এরপর গত ২০ জুলাই দেশটির এমপিদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসা রনিল বিক্রমাসিংহে।
টি আই