সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলার প্রধান আসামী ও মাষ্টারমাইন্ডসহ ২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
রবিবার (১৭ জুলাই) র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চাঞ্চল্যকর জোড়াখুন মামলার আসামিরা যশোর জেলার মনিরামপুর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি একই তারিখ রাতে সময় যশোর জেলার মনিরামপুর থানাধীন ঝাপা ইউনিয়ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত লাল্টু বাহিনীর প্রধান এজাহার নামীয় ১নং আসামী ও উক্ত খুনের মাষ্টারমাইন্ড মুলহোতা আব্দুল হামিদ লাল্টু(৫২) ও অন্য আসামী বাবলু গাজী(৪২), উভয় থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরাদ্বয়কে গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই বিকালে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার টেংরাখালী গ্রামে ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের সাথে শ্যামনগর থানার রমজাননগর ইউপি আওয়ামী লীগের নেতারা মিটিং করেন। মিটিং চলাকালীন সাতক্ষীরা এলাকায় দাঙ্গা, হামলার মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টিকারী লাল্টু বাহিনীর প্রধান আব্দুল হামিদ লাল্টু এবং তার প্রধান সহযোগী আজগার আলী বুলুদ্বয়ের নেতৃত্বে ১১০-১২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল রামদা, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, গাছি দা, লাঠি, হকিস্টিক, জিআই পাইপ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়৷ এ সময়ে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্র, অফিসের সামনে থাকা মোটর সাইকেল ও কার্যালয়ের ভিতর থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে নষ্ট করে৷ এ সময় মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিবর্গ তাদের এই কর্মকান্ডে বাধা দিলে আসামিরা তাদেরকে আঘাত করে গুরুতর জখম করে ৷ আসামিরা ভাংচুর করে ও ভিকটিমদের জখম করে চলে যায় ৷ এ সময়ে স্থানীয় লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় ১৮-২০ জনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত আমির হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন৷ গুরুতর আহত কাদের শেখও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স যোগে নেওয়ার পথে মৃত্যু বরণ করেন ৷
এই বিষয়ে মোঃ আব্দুল বারী বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় ৭৩ জন এজাহার নামীয় আসামিসহ ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ৷ ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে ৷ সংগঠিত হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে র্যাব-৬ এর একটি অভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।