বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১৩৩টি টেস্ট খেলেছে। এর ভেতর টাইগাররা জয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র ১৬টিতে। অপরদিকে পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ৯৯টি ম্যাচে। বাকি ১৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে, যার অধিকাংশই বৃষ্টির কল্যাণে।
টেস্ট ক্রিকেটে ব্যর্থতার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করতে চায় বাংলাদেশ। এবারের লড়াইয়ে পরাস্ত হলেই পূর্ণ হবে হারের সেঞ্চুরি। এমন সময়কে শক্তভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। শুক্রবারে শুরু হওয়া ম্যাচে জয়ের বিকল্প ভাবছে না দল।
টপ অর্ডারদের ব্যাক টু ব্যাক ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে তাই চ্যালেঞ্জ একটু বেশি। শুক্রবার সেইন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় গড়াবে ম্যাচটি।
সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণে উইন্ডিজের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হারতে হয়েছে সফরকারীদের। ক্যারিবীয় বোলারদের বোলিং তোপে দুমড়ে মুচড়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ।
প্রথম ইনিংসে তো ১০ ব্যাটারের ভেতর মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের রানের দেখা পেয়েছেন। বাকি সাতজনকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে এক অঙ্কের ঘরে আটকে থেকে। আর এই সাতজনের ভেতর ছয়জনকে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে রানের খাতা খোলার আগেই।
টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতা বাংলাদেশ দলের জন্য এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের ভুলগুলো দূর করার কোন উপায়ই যেন খুঁজে পাচ্ছেননা তারা। সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ৫টি টেস্টে নিয়মিত ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। সেটি হয় প্রথম ইনিংসে, না হয় দ্বিতীয় ইনিংসে। ফলে পরাজয়ের লজ্জা মাথা পেতে নিতে হয়েছে দলটিকে।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের দুই দফা ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটেছে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম টেস্টে ৫৩ ও দ্বিতীয় টেস্টে ৮০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল টাইগারদের ইনিংস।
অপরদিকে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসেই টপ অর্ডারের ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে। ২৪ রানেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট।
একই দৃশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েও। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডার ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। যার ফলে আরো একটি পরাজয় মাথা পেতে নিতে হয় সফরকারী টাইগারদের। বারবার এমন ব্যর্থতায় বাংলাদেশ এখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।
ক্লিন সুইপ এড়ানোর লক্ষ্যে শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নামবে বাংলাদেশ। এই টেস্ট হাতছানি দিচ্ছে আরও একটি লজ্জা। এই টেস্টে হারের মুখ দেখলে বাংলাদেশের পূর্ণ হবে হারের সেঞ্চুরি। কারণ ৯৯ ছুঁয়ে ফেলেছে তারা এরই মাঝে।
এখন পর্যন্ত ১৩৩টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর ভেতর টাইগাররা জয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র ১৬টি। অপরদিকে পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ৯৯টি ম্যাচে। বাকি ১৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে, যার অধিকাংশই বৃষ্টির কল্যাণে।
তবে দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু সেইন্ট লুসিয়া হওয়ায় আশা দেখছে বাংলাদেশ। এখানেই প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল বাংলাদেশ। যদিও শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছিল ম্যাচটি।
একই সঙ্গে পেইসারদের স্বর্গ সেইন্ট লুসিয়ায় আশা জাগাচ্ছে প্রথম টেস্টে পেইসারদের পারফরম্যান্স। প্রথম টেস্টের নজরকাড়া পারফরম্যান্স যদি এই টেস্টেও পেইসাররা ধরে রাখতে সক্ষম হন, আর তার সঙ্গে যদি ব্যাটাররা একটু দায়িত্বশীল হন তাহলে সহজেই লজ্জার রেকর্ড এড়িয়ে উইন্ডিজের বিপক্ষে পঞ্চম জয় বাগিয়ে আনা সম্ভব হবে বাংলাদেশের পক্ষে।
এখন পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১৯টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। তার ভেতর জয় পেয়েছে মাত্র ৪টিতে। বিপরীতে পরাজয় মেনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ১৩ ম্যাচে। বাকী দুই ম্যাচ হয়েছে ড্র।
দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে আসতে পারে কিছু পরিবর্তন। একাদশে জায়গা করে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ব্যাটার এনামুল হক বিজয় ও পেইসার শরিফুল ইসলামের।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোমিনুল হক, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা,শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, এনামুল হক বিজয় ও নুরুল হাসান সোহান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট (অধিনায়ক), জারমেইন ব্ল্যাকউড, এনক্রুমাহ বোনার, জন ক্যাম্পবেল, জশুয়া ডি সিলভা, আলজারি জোসেফ, কাইল মায়ার্স, গুডাকেশ মোটি, অ্যান্ডারসন ফিলিপ, রেমন রেইফার, জেইডেন সিলস ও ডেভন টমাস।