সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ডিপিএস এর মাধ্যমে ১০ বছরে দ্বিগুণ টাকার প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে প্রতারক শরিফুল ইসলাম এর মাধ্যমে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এলাকার সহস্রাধিক গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা মেয়াদ উত্তীর্ণ ডিপিএসের টাকাসহ জমাকৃত টাকা ফেরতের পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক আলমগীর সরদার বাদী হয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পক্ষে মঙ্গলবার (২১ জুন) থানাায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে থানাায় অভিযোগের পর উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কোন অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় রোডে আলমগীর হোসেনের বাড়ির নিচতলায় তালাবদ্ধ অবস্থায় সাইনবোর্ড লাগানো একটি শাখা অফিসের সন্ধান মিললেও বাড়ির মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, ৩-৪ বছর আগে তারা চলে গেছে।
অভিযোগের সূত্র এবং ভুক্তভোগী গ্রাহক তারালী গ্রামের সালাউদ্দিন, সিরাজুল ইসলাম, মোস্তফা গাজী, হযরত আলী, আমিরুল, আব্দুস সামাদ, আবুল কালাম ইদ্রিস আলী সরদার, রোকসানা পারভীন, আমির হামজা, নাজমা বেগম, শহর আলী, বাবু গাজীসহ এলাকার শত শত গ্রাহক জানান, ১৫-১৬ বছর আগে তারালী গ্রামের করিম গাজীর ছেলে প্রতারক শরিফুল ইসলাম নিজেকে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আল মদিনা ইসলামী বীমা প্রকল্পের কালিগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করেন। তিনি উপজেলার খেটে খাওয়া সহজ সরল অসহায় গরিব ব্যক্তিদের ডিপিএস এর মাধ্যমে ১০ বছরে দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা এবং বাৎসরিক প্রিমিয়ামের টাকা আদায় করে আসলেও কোন গ্রাহককে অফিস দেখাননি। তাছাড়াও গ্রাহকরা জানে না তাদের অফিস কোথায়। প্রতারক শরিফুল ইসলাম এলাকার ছেলে হওয়ায় তারা সরল বিশ্বাসে তার কাছে টাকা দিতে থাকে।
এভাবে টাকা জমা দেয়ার একপর্যায়ে গ্রাহকদের বীমা বা ডিপিএস এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতারক শরিফুল ইসলামের আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর টাকা চাইতে গেলে উল্টো গ্রাহকদের উপর নেমে আসে নানা ধরনের হুমকি, ধামকি। শরিফুল নিজেকে স্থানীয় এমপি সাহেবের লোক পরিচয় দিয়ে তার ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে গ্রাহকদের হুমকি-ধামকি দিয়ে থামিয়ে রাখে।
এ ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য শাখা ব্যবস্থাপক পরিচয়দানকারী শরিফুলের মুঠোফোনে ফোন দিলে তার ছেলে পরিচয় দিয়ে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে টাকা কোম্পানির কাছ থেকে বুঝে নেওয়ার হুমকি দিয়ে লাইন কেটে দেন।