সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োাগ পরীক্ষা কেন্দ্র স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার অভিযোগে কারাদন্ড প্রাপ্ত কেয়া রানী বসু’র সহযোগিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসি। তাদের দাবি, কিছু অসাধু মানুষ নিয়োগ পরীক্ষা ফেয়ার করার জন্য সরকারের সবচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে সর্বদা তৎপর। তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
কারাদন্ডপ্রাপ্ত পরীক্ষাথী কেয়া রানী বসু সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুঁন্দড়িয়া গ্রামের রবিন্দ্রনাথ দে’র স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেয়া রানী বসু’র স্বামী রবিন্দ্রনাথ দে নিজেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপিকে দাদা শ্বশুর পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার বিভিন্ন মানুষের থেকে করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দিনাজপুর মেডিকেলের মেডিকেলে চাকরি করলেও অদৃশ্য ক্ষমতার বলে প্রায়ই তিনি বাড়িতেই থাকেন।
বুধহাটা ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য মমতাজ বেগম জানান, রবিন্দ্রনাথ দে বেউলা গ্রামের স্বজলসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ৫ বার এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পরেও রবিন্দ্রনাথ দে স্বাস্থ্য বিভাগে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। তার মামা ৪ বার আইডি কার্ডের বয়স পরিবর্তন করে ১৪বছর বয়স কমিয়ে বহাল তবিয়তে কুন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চাকরী করছেন। বয়স কমাতে গিয়ে এত বেশি কমিয়ে ফেলেছেন যে, এখন ছোট ভাই হয়েছেন বড় ভাই আর বড় ভাই হয়ে গেছে ছোট। আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় এসব অফিসে সে সব সময় অসম্ভবকে সম্ভব করে। রবিন্দ্রনাথ দে দিনাজপুর মেডিকেলের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ই পি আই পদে চাকরিরত থাকলেও প্রায়ই তাকে এলাকায় থাকতে দেখা যায়। তিনি কেয়া রানী বসু’র সহযোগিদেরকেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এদিকে, সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল স্কুল কেন্দ্রে সাজাপ্রাপ্ত কেয়া রানী বসু’র সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। তাদের দাবি, দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োাগ পরীক্ষা সম্পূর্ন ফেয়ার হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু অসাধু মানুষ নিয়োগ পরীক্ষা ফেয়ার করার জন্য সরকারের সবচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে তৎপর রয়েছে। তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
প্রসঙ্গতঃ সাতক্ষীরা জেলার অন্যান্য কেন্দ্রের ন্যায় গত শুক্রবার (৩ জুন) সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে আশাশুনি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োাগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুঁন্দড়িয়া গ্রামের রবিন্দ্রনাথ দে’র স্ত্রী কেয়া রানী বসু অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কাছে থাকা স্মার্টফোনে অন্যত্র যোগাযোগের অপরাধে পল্লীমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ১০৭ নং রুম থেকে কেয়া রানী বসুকে আটক করা হয়। স্মার্ট ফোনসহ আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম তারেক সুলতান পরীক্ষার্থী কেয়া রানী বসুকে ১০ দিনে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।