বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণমুখী কার্যকলাপের অপপ্রচার, অবরোধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টায় সাতক্ষীরার সদরের খলিলনগর ফুটবল মাঠের পাশে গোপন বৈঠক ও পুলিশের উপর হামলা ও অর্ন্তঘাতমূলক কর্মকান্ড করার অভিযোগে আন্তজার্তিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর আব্দুল খালেক মন্ডল. ফিংড়ি ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমীর মোস্ট ওয়ান্টেড হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার (১২ মে) সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫ (ঘ) ধারায় এ অভিযোগ গঠন করেন। আগামি ১৫ জুন সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
অভিযোগ গঠন হওয়া আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও সদর উপজেলার খলিলনগরের আব্দুল খালেক মন্ডল, যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার নিত্যানন্দপুর গ্রামের(বর্তমানে সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান) টিপু সুলতান বিশ্বাস, শ্যামনগর উপজেলার ঘোলা গ্রামের(বর্তমানে শহরের রাজারবাগান) ইমদাদুল হক, কলারোয়া উপজেলার শুভঙ্করকাটির গ্রামের (বর্তমানে শহরতলীর বাঁকালের পাশে) শাহীনুর রহমান মিন্টু, কুশখালির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ভাদড়া গ্রামের জামায়াত নেতা আব্দুল গফফর, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী ও সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের নুরুল হুদা, আহাদ খান, সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের জামসেদ আলী, জামায়াত নেতা সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামের মোহাদ্দেস আব্দুল খালেক, ফিংড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মোস্ট ওয়ান্টেড হাবিবুর রহমান, শহরের পলাশপোলের আলতাফ হোসেন সানা, দেবহাটা উপজেলার নারিকেলি গ্রামের আফগান জিয়া, জেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক কালিগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রামের আজিজুর রহমান, একই উপজেরার সন্ন্যাসির চক গ্রামের রুহুল আমিন সদর উপজেলার ইন্দিরা গ্রামের আমিনউদ্দিন মুন্সি, নারায়নজোল গ্রামের খলিলুর রহমান, পদ্মশাঁখরা গ্রামের আব্দুল গফুর, শহরের রসুলপুরের হাবিবুর রহমান হবি, শিকড়ি গ্রামের শামীম হোসেন, খানপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ ও ফরহাদ হোসেন, নেবাখালি গ্রামের আবুল হাসান, ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রহমান, কাথন্ডা গ্রামের মোশাররফ হোসেন ও আব্দুল খালেক, বাবুলিয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ গাজী, মাহমুদপুরের হাফিজুর রহমান, ধুলিহর বাজারখোলার জাহিদ বিশ্বাস, চৌবাড়িয়া গ্রামের মোঃ আসাদুর রহমান, বল্লী গ্রামের অলিয়ার রহমান, বাঁশঘাটার আব্দুর রশিদ, শহরের রসুলপুরের খবিরউদ্দিন, আলীপুরের মাহামুদুর রহমান ও আশাশুনি উপজেলার বড় দুর্গাপুর গ্রামের মোসাদ্দেক হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণমুখী কার্যকলাপের অপপ্রচার, অবরোধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় সাতক্ষীরার সদরের খলিলনগর ফুটবল মাঠের পাশে গোপন বৈঠক, পুলিশের উপর হামলা ও অর্ন্তঘাতমূলক কর্মকান্ড করার অভিযোগে রাতেই সদর থানার উপপরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল খালেক, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী নুরুল হুদা, জামায়াত নেতা আব্দুল গফফর, জামায়াতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, ফিংড়ি ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর ও পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড হাবিবুর রহমান হাবিব, দেবহাটার নারিকেলি গ্রামের আফগান জিয়াসহ ১২ জনের নাম উলে¬খ করে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫(ঘ) ধারাসহ পেনাল কোর্ডের ৩০৭সহ কয়েকটি ধারায় মামলা(জিআর-৫৩/১৫) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক তানভির হোসেন ওই বছরের ১৮ মার্চ এজাহারভুক্ত ১২জনসহ মোট ৩৪ জনের নাম উলে¬খ করে অভিযোগপত্রে উলে¬খিত ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যড. ফাহিমুল হক কিসলু জানান, বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা কারাগার থেকে আব্দুল খালেক মন্ডল ও আফগান জিয়াকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। জামিনে থাকা আহাদ খান আদালতে সময়ের আবেদন করেন। এ ছাড়া আব্দুল্লাহ গাজী, আরিফুল ইসলাম, আব্দুল খালেক হাজরা, খলিলুর রহমান, শেখ খবিরউদ্দিন, আজিজুর রহমান, রুহুল আমিন, মোশাররফ হোসেন, আব্দুল গফফর, নুরুল হুদা, আলতাফ হোসেন, ওলিয়ার রহমান, আব্দুল গফুর, শামীম হোসেন, টিপু সুলতার বিশ্বাস, ফরহাদ হোসেন, হাফিজুর রহমান,,মোসাদ্দেক হোসেন, আব্দুর রশিদ ও আবু হাসান মোট ২১ জন আসামী কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। সময়ের আবেদন জানানো আহাদ খানের জামিন বাতিল করা হয়। আব্দুল খালেক মন্ডল, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক আফগান জিয়া, নুরুল হুদা, হাবিবুর রহমান হবিসহ ১২ জন মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ার আবেদন করেন। যারা মামলার প্রথম থেকেই পলাতক রয়েছেন তাদের মালামাল ক্রোপসহ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপরওই বৃহষ্পতিবার ৩৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫(ঘ) ধারায় অভিযোগ গঠণ করা হয়েছে। আগামি ১৫ জুন সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য আছে। সাক্ষীরা যদি যথাসময়ে আদালতে হাজির হন তাহলে আগামি এক বছরের মধ্যেই মামলাটির বিচার শেষ করা যাবে বলে তিনি মনে করেন।