সাতক্ষীরার ভোমরা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের পাতানো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ব্যবসায়ী মহল। তারা এই নির্বাচন মানিনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। পাতনো নির্বাচন বয়কট করে বিষয়টি নিয়ে তারা শ্রম আদালতের শরনাপন্ন হবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ভোমরা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সাথে সংযুক্ত ব্যবসায়ীদের এই প্রশ্নের মধ্যে আকস্মিকভাবে নির্বাচন কমিশন ৯টি মনোনয়নপত্র দাখিলের খবর দিয়েছেন। কমিশন বলছে, ৯টি পদের বিপরীতে ১৮টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত মাত্র ৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এরা হলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু ও মাকসুদ খান ও সহ-সভাপতি পদে এজাজ আহমেদ স্বপন। এছাড়া অন্যান্য পদে আমির হামজা, দিপংকর ঘোষ, রফিকুল ইসলাম, আবু মুসা ও নির্বাহী সদস্য পদে আশরাফুজ্জামান আশু ও শাহানুর ইসলাম।
অথচ গত ৯ মে দিনভর ভোমরা সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশন ভবন ছিল পুলিশ দ্বারা অবরুদ্ধ। নির্বাচন কমিশনের কাউকে ওই ভবনে দেখা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক মোঃ মিজানুর রহমান। তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনার অজ্ঞাত স্থানে থেকে কিভাবে ৯টি পদের বিপরীতে ১৮টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেন তা নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে ।
অপরদিকে এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পাতানো এবং এর পেছনে কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা যে অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয় বলে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার আশরাফুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘আমার হাত থেকে ১৮টি মনোনয়ন বিক্রয় হয়েছে। মঙ্গলবার তার ৯টি জমা পেয়েছি’। সোমবার নির্বাচন কমিশনের কোন লোকজনকে সিএন্ডএফ অফিসে দেখা যায়নি অথচ সেখানে ছিল দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের বাঁধার মুখে আগ্রহী সদস্যরা মনোনয়নপত্র ক্রয় করতে পারেননি এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল ইসলাম খোকন বলেন, আমরা সিএন্ডএফ ভবনে যথাযথ নিরাপদ স্থানে ছিলাম। এমন ধরনের কোন অভিযোগ কেউ আমার কাছে করেনি। এমনকি আমি কোন টেলিফোনও পাইনি।
নির্বাচন কমিশনার আশরাফুল ইসলাম খোকনের বক্তব্য নাকোচ করে দিয়েছেন এ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটির সদস্য রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপে পড়ে নির্বাচন কমিশনার আশরাফুল ইসলাম খোকন শিক্ষকতার মত মহান পেশায় নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও মিথ্যের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। হাওয়া থেকে পাওয়া ১৮ টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে ৯ টি মনোনয়নপত্র দাখিলের ফটোসেশান করে সিএন্ডএফ এজেন্টদের সম্মান নষ্ট করা হচ্ছে। এই পাতানো নির্বাচন জায়েজ করার জন্য তারা স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে ফুল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা ব্যবসায়িরা এই পাতানো নির্বাচন বয়কট করছি এবং বিষয়টি নিয়ে আমরা দ্রুত শ্রম আদালতের শরনাপন্ন হবো।
এদিকে শ্রম আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে মনোনয়নপত্র বিক্রয়ের দিনে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে আহবায়ক মিজানুর রহমান সংগঠনের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। কারণ, শ্রম আদালতের নির্দেশনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা তা তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের। ভোমরা বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজির কালোটাকা এই পাতানো নির্বাচনে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে একাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট জানিয়েছেন।
অপরদিকে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু জানান, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং তা পূরণ করে মঙ্গলবার জমা দিয়েছি।
খুলনা গেজেট/ এস আই