সাতক্ষীরার দেবনগরে মেঝ ভাই ইদ্রিস আলীর হাত থেকে নিজ সম্পত্তি রক্ষাসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ছোট ভাই। বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান, সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের মৃত শওকত আলীর ছেলে ভুক্তভোগী জুলফিকার আলী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ৫ পাঁচ ভাই ও এক বোন। আমার পিতা ২০১০ সালে মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন যে, আমার ভাইদের মধ্যে মেঝ ভাই কৃষক ইদ্রিস আলীর আচরন অশালীন। এ কারনে আমার পিতা ১৯৮৯ সালে মূল ভিটা থেকে অন্যাত্র এসে ১৭৫১ দাগে মাঠের জমিতে বসত ভিটা তৈরি করেন। সেখানে আমি, আমার বড় ভাই কওছার আলী, ছোট ভাই এবং পিতাসহ একসাথে বসবাস করতে থাকি। এরপর ২০০০ সালের বন্যায় আমার বসত বাড়ি কাঁচা ঘর ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার ও পিতার টাকা দিয়ে একটি ইটের ঘর নির্মাণ করি। সেখানে আমরা বসবাস করতাম। কিন্তু পরবর্তীতে বাইপাস সড়ক নির্মাণ হওয়ার পর আমার মেঝ ভাইয়ের নজরে পড়ে আমার বসবাসের স্থানটির উপর। এরই জের ধরে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে রাত ১০ টার দিকে বদরুজ্জামান ডালিম, মেঝ ভাই ইদ্রিস আলী ও স্ত্রী ডলি আমার ঘরে প্রবেশ করে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে আমাকে এখানে বাস করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়।
জুলফিকার আলী অভিযোগ করে বলেন, এমতাবস্থায় আমি মেম্বর আসাদুজ্জামান ও চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা কথা বলেও ব্যর্থ হন। পরে আমি বিষয়টি নিয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে থাকা এস আই মেহেদি আর্থিক সুবিধা নিয়ে মেঝ ভাইয়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একটি ভূয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই ভূয়া তদন্ত প্রতিবেদনের কারণে জবরদখল কারী ইদ্রিস আলী গংরা আরও বেশি সুযোগ পায়। সর্বশেষ একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে এস আই ওসমান উভয় পক্ষের বসাবসির এক পর্যায়ে মেঝ ভাই ইদ্রিস আলী শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে স্বীকার করে। কিন্তু ভাগ করার সময় ইদ্রিস আলী আমিন সাহেবকে দা দিয়ে খুন করতে উদ্যত হলে তিনি মাপ ছেড়ে চলে যান।
তিনি আরো বলেন, প্রকৃত পক্ষে আমার ভাই ইদ্রিস আলী সব কিছু দখলে নিয়ে আমাকে ভিটে ছাড়া করতে চায়। একপর্যায়ে তার দৌরাত্ব থেকে বাঁচার জন্য আমি কোর্টে কেস করি। আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত উক্ত জমির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ১৬ এপ্রিল শনিবার আমি কর্মস্থল খুলনা থাকায় এবং আমার পরিবারও বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাতে ঘরের চালের টালি খুলে এবং মাঝের দেওয়াল ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল লুট, ভাংচুর, তছনছ এবং নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। এরপর ১৮ এপ্রিল ঘরের তালা ভাঙে এবং বেড়া দেয়। পরে লোকজন দেখতে পেয়ে আমাকে জানালে আমি বাড়িতে এসে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে অবহিত করলে তিনি ফোর্স পাঠিয়ে দিলে তারা দেখেন যে, বাড়ির প্রবেশের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ। তখন পুলিশের সহায়তায় বাড়ির যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত করে দিয়ে আমরা বাড়িতে প্রবেশ করি। বাড়িতে ঢুকে পুলিশ এবং আমরা দেখতে পাই যে, ঘরের মধ্যে সকল জিনিস পত্র তছনছ এবং ভাংচুর করা ও মাঝের দেওয়ার ভাঙ্গা এক কথায় সবকিছু এলোমেলা করা। এমতাবস্থায় আমি ও আমার পরিবার সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। ইদ্রিস আলী এবং তার দোসররা যে কোন সময় আমার ও পরিবারের উপর ফের হামলা করতে পারে।
তিনি সন্ত্রাসী মেঝ ভাইয়ের হাত থেকে সম্পত্তি রক্ষাসহ পরিবার নিয়ে যাতে নির্বিঘ্নে নিজের বাড়িতে বসবাস করতে পারেন এবং একই সাথে ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।