সাতক্ষীরায় পাঁচ বছরের শিশু আলিফ ফরহাদকে নৃশংশভাবে নির্যাতন করার অপরাধে রানী বেগম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ মার্চ) বেলা ২টার দিকে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। রানী বেগম সর্ম্পকে আলিফ ফরহাদ এর মামি হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামী রানী বেগম (২২) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, মা না থাকায় পাঁচ বছরের শিশু আলিফ ফরহাদ দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামে তার মামা আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে থাকতো। সোমবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বেলা ১২টার দিকে তার মামী আসামী রানী বেগম (যাকে শিশুটি মা বলে ডাকে) শিশু আলিফকে বসত ঘরের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুচিয়ে-খুচিয়ে মারাত্মক ভাবে রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া তার চোখের আশে পাশে, মুখমন্ডলে, নাকে মুখে, ঠোটে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এসময় আসামী রানী বেগম শিশুটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুত্বর জখম করে। শিশু আলিফ মৃত্যুবরণ করেছে মনে করে আসামী রানী বেগম তাকে বাড়ির পাশে পুকুরের (পানি বিহিন পুকুর) মধ্যে ফেলে রেখে যায়।
একপর্যায় বেলা দেড়টার দিকে শিশু আলিফের ছোট মামা আশিক(১৪) বাড়িতে এসে তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে । খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শিশু আলিফকে বাড়ির পাশে পুকুরের মধ্য হতে মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার করে। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় এবং সেখানে তাকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। শিশুটি তখন উপস্থিত চিকিৎসক, সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজনদের সামনে তার মামী রানী বেগম তাকে এরুপ ভাবে নির্যাতন করেছে বলে জানায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সাতক্ষীরা সদও হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় নদীর পাঁড়ে ক্ষত-বিক্ষত শিশু
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) বিশ্বজিৎ অধিকারি জানান, স্থানীয়ভাবে ঘটনার সংবাদ পেয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম বার) এরকম শিশু নির্যাতনের মত স্পর্শকাতর ঘটনায় জড়িত আসামীকে তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে বেলা ২টার দিকে সাতক্ষীরা সদর থান ও দেবহাটা থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে চরবালিথা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আসামী রানী বেগমকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকতাগণ জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই