খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

সয়া সস নিয়ে যা না জানলেই নয়

লাইফ স্টাইল ডেস্ক

সয়া সসের জন্ম নিয়ে নানা গল্প আছে। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য গল্পটা বলি। প্রায় দুই হাজার বছর আগে হানদের শাসনামলে চীনা ভিক্ষুরা ঠিক করলেন, তাঁরা আর আমিষ খাবেন না। সবাই নিরামিষভোজী হয়ে যাবেন। সেই সময় আমিষ স্পর্শ না করেও যাতে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা যায়, এ জন্য আমিষের বিকল্প নিরামিষ খোঁজা শুরু হলো। তখন বিশ্ব টফু (সয়াবিনের দুধ দিয়ে বানানো কার্ড ভাজা), সয়া দুধ, সয়া পনির, সয়া সস—এগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। এখন তো বাংলাদেশেও সয়াবিনের নাগেট বা বড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়।

সয়া সসের ব্যবহার

চীনে যেহেতু এ রান্নার অনুষঙ্গের জন্ম, তাই চীনা খাবারে সাধারণত ব্যবহার করা হয় সয়া সস। সয়া সস দুই ধরনের। একটা গাঢ়, আরেকটা হালকা। সাধারণত, আমরা গাঢ় সয়া সস বেশি ব্যবহার করি—মাংস মেরিনেট করে রাখতে আর সুশির সঙ্গে। হালকা সয়া সস সালাদে ব্যবহার করা হয় বেশি। সামুদ্রিক খাবার রান্নায়ও এ সয়া সস দেওয়া হয়। ভাত, পাস্তা, উদ্ভিজ্জ স্টুতে লাগে হালকা সয়া সস। এসব ক্ষেত্রেও আমরা সাধারণত গাঢ় সয়া সসটাই ব্যবহার করি।

সয়া সসের প্রধান কাজ হলো খাবারকে সুস্বাদু করে তোলা। হজমে সহায়তা করা। কাঁচা লবণ ব্যবহার না করে শুধু সয়া সস দিয়েও রান্না করা যায়। কেননা, সয়া সসে প্রচুর লবণ আছে। এ ছাড়া অন্য উপাদানও আছে; যেগুলো লবণে নেই। যখন থেকে বাংলাদেশে চীনা ও জাপানি খাবার জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে, তখন থেকে সয়া সসও জনপ্রিয়তা পায়। এখন মোটামুটি সবার ফ্রিজে সসের কৌটার জায়গায় সগৌরবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে সয়া সস।

সয়া সসে আছে খনিজ উপাদান, ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে এগুলো লড়াই করে। সয়া সসে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। হৃৎক্রিয়ার দক্ষতা বাড়ায়। হাড় মজবুত রাখতেও সাহায্য করে। সয়া সসের মূল উপাদান প্রোটিন। এ কারণে এটি শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে।

প্রোটিন খেলে সাধারণত কম খিদে পায়। তাই সয়া সস দিয়ে রান্না করা খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মস্তিষ্কের ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। খাবারের খুবই উপকারী একটা উপাদান হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ‘অ্যান্টি–এজিং’–এ উপাদানটির গুণের শেষ নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ কারণে যেসব খাবারে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আছে, সেসব খাবার আপনি চোখ বন্ধ করে খেতে পারেন। তাই সুস্বাদু সয়া সস আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় স্থান পেতেই পারে।

অপকারিতাও জেনে নিন

বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাসায়নিক হাইড্রোলাইসিস ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে উত্পাদিত সয়া সসই বেশি পাওয়া যায়। তাই কেনার সময় সাবধান। সাধারণত, কাচের বোতলে স্বচ্ছ বাদামি রঙের সয়া সস ভেজালমুক্ত। এখানে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপসহ লবণে সমস্যা, তাঁরা বুঝেশুনে, পরিমাণ মেনে খাবেন। এটি অন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে। সয়া সসে থাকা লবণ অন্ত্রের প্রাচীরের ক্ষতি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কারও কারও ক্ষেত্রে সয়া সস এলার্জি আর মাইগ্রেনের কারণ। অকালগর্ভপাতের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো।

 

খুলনা গেজেট/কেএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!