সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউপির ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ও মাদক সম্রাট আজাদ হোসেন গ্রেপ্তার হলেও তার জামাতা কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ি পুলিশের হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কামরুজ্জামান রানাকে তিন দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এক সময়কার জাতীয় পার্টির কর্মী আজাদ হোসেন উর্দ্ধতন নেতাদের ম্যানেজ করে সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের গোবিন্দকাটি ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি বনে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে মাদকের ১০টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১২ নভেম্বর ইউপি সদস্য পদে তালা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভের পর এক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিপক্ষ আব্দুল মালেকের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও কর্মী আলাউদ্দিনের বিচালীগাদায় অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ ওঠে আজাদ হোসেন ও তার জামাতা কামরুজ্জামান রানার বিরুদ্ধে। এরপর ঝাউডাঙ্গা ইউপি’র একজন জনপ্রতিনিধি তার নিজের নির্বাচনী প্রতিপক্ষদের জব্দ করতে আজাদ হোসেনেকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করান। তাকে দিয়েই শালিসের নামে প্রতিপক্ষদের জব্দ করার প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়। স¤প্রতি ঝাউডাঙ্গা বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আব্দুল আজিজ নামের একজনকে ধরে নিয়ে রাস্তায় ফেলে নির্যাতন করে আজাদ বাহিনীর সদস্যরা। আজাদের বাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তার জামাতা ২০১২ সালের ২৪ মার্চ ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসা নাম একই গ্রামের কুখ্যাক মাদক ব্যবসায়ি ও সন্ত্রাসী কামরুজ্জামান রানা। ২০১৪ সালের ২২ আগষ্ট সাতক্ষীরা সদরের গোপীনাথপুর গ্রামের জগদীশ গোস্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কালিয়ানি- ছয়ঘরিয়া সীমান্তে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার অন্যতম এজাহারভুক্ত আসামী কামরুজ্জামান রানা।
গোবিন্দকাটি গ্রামের মতিয়ার রহমান মতি ও মোস্তাক জানান, গত মঙ্গলবার রাতে ভারত থেকে তারা ৫ কেজি গাজা আনার পর আজাদের নির্দেশ অনুযায়ি তা রানার নেতৃত্বে ছিনতাই করা হয় তার বাড়ির সামনে থেকে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহষ্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে রানার বাড়ির সামনে থেকে মতিয়ার ও বাপ্পি হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সদর থানার সহকারি উপপরিদর্শক মোঃ জিয়া। তাদের দেওয়া তথ্য মতে রানার বাড়ি থেকে ওই গাজা উদ্ধার করার সময় আটক করা হয় রানাকে। এ খবর পেয়ে আজাদের সহযোগিতায় রানা পুলিশের লাগানো হাতকড়াসহ পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় আজাদ তার জামাতা রানার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই হাতকড়া পুলিশকে ফিরিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, থানায় তার ও জামাতার নামে মামলা হচ্ছে জানতে পেরে আজাদ থানায় যায় তদ্বির করতে। এ সময় আজাদ হাতকড়া ফিরিয়ে দিলেও জামাতা রানাকে ধরিয়ে দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং সে কমপক্ষে ১০টি মামলার আসামী জানতে পেরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন মাদক মামলায় পৃষ্টপোষক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু তার জামাতা রানাকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক ইসমাইল হোসেন বলেন, পলাতক রানা ও আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত আছে।