তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ৫টি ও কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আর মাত্র চারদিন বাকী রয়েছে। শেষ মুহুর্ত্বের প্রচার প্রচারণা নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করলেও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন অনেক প্রার্থী। ইতিমধ্যে একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট গ্রহণের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌছানোর দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচনী পরিবেশ কেমন থাকবে এবং কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স ঠিক কখন পৌঁছাবে তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত চেয়ারম্যান ও মেম্বর পদের আড়াই শতাধিক প্রার্থী। যদিও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময়কালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী এবং দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ নির্বাচনকে ঘিরে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দিলেও শঙ্কামুক্ত নন প্রার্থীরা। এছাড়া কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ঠিক কখন পৌছাবে তা নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখও সুষ্পষ্ট কোন সিদ্ধান্ত না জানানো হলেও, ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের একাধিক সূত্র।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার প্রায় শেষ মুহুর্তেও বিভিন্ন এলাকায় একাধিক প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থক কর্তৃক নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্র দখল ও ছাপ্পা ভোট মারার হুমকিতে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেসব এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। অনেক প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ও কর্মী সমর্থকদেরকে ভোটের দিন কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন বলেন অভিযোগ উঠেছে।
এমনই অভিযোগ তুলে সুষ্ঠ নির্বাচন এবং ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোটের দিন সকালে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন কুলিয়া ইউনিয়নের টানা পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগের বিদ্রোহী ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আছাদুল হক।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ আছাদুল হক সম্প্রতি ঢাকাস্থ নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবার লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। একইসাথে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অধিনায়ক র্যাব-৬, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার পরিদর্শক, জেলা নির্বাচন অফিসার, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ, দেবহাটা উপজেলা রিটার্নিং অফিসার এবং দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি/সম্পাদক বরাবরও ওই লিখিত আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন তিনি।
লিখিত আবেদনে আছাদুল হক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষতার সাথে সম্পন্নের বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সুষ্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু কুলিয়া ইউনিয়নে আছাদুল হকের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের একজন প্রার্থী এবং তাদের লোকজন নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তারা পেশিশক্তি, কালোটাকা এবং সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘিœত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এমনকি তারা বিশেষ প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং ভোটের দিন জোর করে কেন্দ্র দখলের হুমকিও দিয়ে আসছে আসাদুল হককে। ফলে কুলিয়ার বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এছাড়া বিগত নির্বাচনেও নির্বাচনী প্রতিপক্ষরা একইভাবে তার একটি ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছিল উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠ নির্বাচন এবং ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোটের দিন সকালে ভোটকেন্দ্র্রে পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছাদুল হক।