সাতক্ষীরার আশাশুনির ইট ভাটা শ্রমিককে মাগুরা জেলার মোহাম্মাদপুরের একটি ইটভাটায় নিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী। সোমবার (৮ নভেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান নিহত ভাটা শ্রমিক সালাম মোড়লের স্ত্রী সেলিনা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার স্বামী সালাম মোড়ল দীর্ঘদিন দীন মজুরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তাদের ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও ৯ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। টানাটানির সংসার কষ্টে চলছিল। এমন সময় খুলনার পাইকগাছার অপরাজী ভবানীপুর গ্রামের মৃত. মত্তাজ গাজীর ছেলে মিল সর্দার সালাম তার স্বামীকে মোটা টাকা আয় করিয়ে দেওয়ার জন্য শ্রমিক হিসেবে মাগুরার ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। স্বামী সালাম তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গত ১১ অক্টোবর সোমবার মিল সর্দারের সাথে মাগুরা জেলার মোহম্মদপুর থানার নদীয়া ব্রিক্সে যান। মাত্র এক সপ্তাহ পর ১৯ অক্টোবর সকালে সালাম আত্মহত্যা করেছে মর্মে ভাটার সর্দার বাড়িতে খবর দেয়। খবর শুনে তারা ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই লাশ স্থানীয় পুলিশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যান। সে সময় পুলিশ তার স্বামীর মৃত্যুর বিষয়টিকে রহস্যজনক মৃত্যু বলে তাকে অবহিত করেন।
সেলিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে পুলিশ আমাদের এজাহারটি গ্রহণ করেনি। আমার স্বামীর ঋণগ্রস্থ বা পারিবারিক কলহও ছিলো না। কেন তিনি কাজে গিয়ে আত্মহত্যা করবেন? আমাদের দারিদ্রের সংসার হলেও দুটি সন্তানকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছিলাম। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে উপার্জনের উদ্দেশ্যেই তিনি ইটভাটায় গিয়েছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার স্বামীকে হত্যা করে শুধু আমাকে বিধবা করা হয়নি আমার দুটি সন্তানকে এতিম করা হয়েছে। একটি পরিবারকে পথে বাসানো হয়েছে। আমাদের ধারনা আমার স্বামীকে হত্যার সাথে মিলের সর্দার সালাম, বুধহাটা কাহারপাড়ার ইউনুস সরদারের মেয়ে বাবুর্চি রত্না বেগম, নদীয়া ব্রিক্সের ম্যানেজার হাসমত আলী, নাইটগার্ড আজগার আলী, সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী ইউনিয়নের রুহুল আমিন এবং খুলনা পাইকগাছা গ্রামের মৃত. ছোবহানের ছেলে রমজান আলী জড়িত রয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হলে হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে।’
তিনি একজন দরিদ্র অসহায় বিধবা নারী হিসেবে স্বামী হত্যার সাথে জড়িত মিল সর্দার সালামসহ অন্যান্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই