ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্মঘটের কারণে সারা দেশে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানসহ সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে। ফলে পেঁয়াজ, ফল, মাছ ও কাঁচা মরিচসহ পচনশীল অন্যান্য আমদানি পণ্য বন্দর থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পরিবহন করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়িরা। পরিবহন ধর্মঘট আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ব্যবসায়িদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হিন্দু সম্প্রদায়ের দিপাবলী অনুষ্ঠান ও শুক্রবার মিলে দু’দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে শুরু হয়েছে ভোমরা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। তবে ধর্মঘটের কারণে ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য পরিবহনে সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, পরিবহন ধর্মঘট আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।
ভোমরা বন্দরের পরিবহন ব্যবসায়ী আবদুল গফুর সরদার জানান, তার মালিকানাধীন ৬/৭টি ট্রাক রয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটি ট্রাক ভোমরা বন্দর থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক মোকামে পৌঁছে দেয়। কয়েকটি ট্রাক ভোমরা বন্দর থেকে পণ্য লোড দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এতে করে গাড়িতে লোড দেয়া পচনশীল দ্রব্যগুলো নষ্ট হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, সকাল থেকে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলছে। তবে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে দেশে প্রবেশের পর পরিবহনের জন্য বাংলাদেশি ট্রাকের সংকট দেখা দিয়েছে। পণ্য পরিবহনের জন্য প্রয়োজন ৪৫০-৫০০ ট্রাক, পাওয়া গেছে মাত্র ৫০-৬০টি ট্রাক। এদিকে আমদানিকৃত কাঁচামালপণ্য পেঁয়াজ, মাছ, ফল এগুলো সঠিক সময়ে সরবরাহ করতে না পারলে পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা। তেলের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বাস-ট্রাক ধর্মঘট ডাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভোমরা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আমির মামুন বলেন, সকাল ৯টা থেকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। দিনশেষে জানা যাবে কতটি ট্রাক দেশে প্রবেশ করল। সাধারণত প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ ট্রাক দেশে প্রবেশ করে। রাজস্ব আদায় হয় তিন থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। ধর্মঘটের প্রভাব এখনো বন্দরের আমদানী-রপ্তানি খুব বেশি পড়েনি।
খুলনা গেজেট/এনএম