সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শ্যামলী রাণী অধিকারির বাড়ির সামনে বোম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩০ অক্টোবর) ভোর রাত পৌনে একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ওই রাতেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর তিন সক্রিয় কর্মীকে আটক করে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বিকালে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আটককৃতরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকার লিয়াকাত শেখ’র ছেলে ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটন হোসেন (৩২), একই এলাকার শেখ নজরুল ইসলামের ছেলে শেখ নাজমুল ইসলাম (২৩) ও শেখ আব্দুর রশিদের ছেলে শেখ মিলন হোসেন (৩৬)।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী হোসেনপুর গ্রামের শ্যামলী রাণী অধিকারি জানান, আগামি ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী। তবে দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তার প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে তার বাড়ির সামনে একটি শক্তিশালী বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। প্রচন্ড শব্দে তার স্বামী বাপ্পি অধিকারী, ছেলে পল্লব অধিকারী ও ননদের ছেলে পার্থ অধিকারী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি মোবাইল ফোনে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, উপপরিদর্শক অহিদুজ্জামান ও সাংসদ জগলুল হায়দারকে অবহিত করেন।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি স্থানীয় নেতা কর্মীদের জানালে রাত পৌনে দু’টোর দিকে তদন্ত ওসি মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ আসার আগেই স্থানীয়রা তার বাড়িতে আসেন। এসময় তিনি দরজার খুলে ঘরের বাইরে এসে বোমা তৈরির ব্যবহৃত সরঞ্জাম হিসেবে একটি লাল কৌটা, কয়েকটি জালের কাটি, কাচের টুকরা ও পাটের দড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেন। এ সময় প্রয়াত ই্উপি চেয়ারম্যার কেএম মোশাররফ হোসেনের মেয়ে লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাফিয়া পারভিনের চাচাত ভাই কেএম অনিছুর রহমানের দু’টি ছবি সম্বলিত একটি মানি ব্যাগও পড়েছিল সেখানে। তাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে প্রতিপক্ষরা এ ধরণের হামলা চালাতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
শ্যামলী রানী অধিকারী আরো বলেন, শনিবার ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি খবর পান যে তার সক্রিয় কর্মী লিটন, নাজমুল ও মিলনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। বিষয়টি তিনি উপজেলা পর্যায়ের নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামকে অবহিত করেন। পরে বিকালে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাফিয়া পারভীন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা পুলিশ খুঁজে বের করবে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, খবরটি শুনে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এরপর সন্দেহভাজন তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হলেও শনিবার বিকেল চারটার দিকে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
খুলনা গেজেট/এএ