সাতক্ষীরায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে এক গৃহবধুকে নির্যাতনের পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে মেরে ফেলে আত্মহত্যার প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহষ্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পর রাত ১২টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় ওই গৃহবধুকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত গৃহবধুর নাম সুমাইয়া পারভীন। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের আছির উদ্দীনের মেয়ে ও কলারোয়া উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রী আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।
সুমাইয়ার বাবা আছিরউদ্দিন ও বাঁশদহা ইউপি সদস্য আহসান উদ্দীন জানান, তিন বছর আগে সুমাইয়ার সাথে বিয়ে হয়েছিল কলারোয়া উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আলমগীরের সাথে। বিয়ের পর থেকেই তার ওপর যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাতো স্বামী আলমগীরসহ তার পরিবারের লোকজন। কয়েকবার মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়েও দেওয়া হয়। এ নিয়ে বারবার শালিস বিচারও হয়েছে। সর্বশেষ বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাধ্যমে মুচলেকা নিয়ে মেয়েটিকে নির্যাতন না করার অঙ্গীকার পাওয়ার পর তাকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হয়। এরপরও যৌতুকের দাবীতে তাকে নির্যাতন করা হতো।
একপর্যায়ে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে মারপিট ও নির্যাতন চালিয়ে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর তার স্বামী ইলেকট্রিক মিস্ত্রী আলমগীর পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তাদের পক্ষ থেকে কলারোয়া থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক রাশেদ বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে সুমাইয়া পারভিনের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই