সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে পানিতে পঁচা ধান হাতে নিয়ে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ভূক্তভোগী কলারোয়া উপজেলার তিন গ্রামের প্রান্তিক চাষীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদুর রহমান কৃষকদের এ ধরনের ক্ষতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয় অবগত হয়েছেন। দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে তিন গ্রামের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সেচ কমিটির সভাপতি আরিজুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, নুর ইসলাম, রত্না খাতুন প্রমুখ।
এ সময় তারা বলেন, আমরা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার মুরারীকাটি, কুমারনল ও কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। বিগত ২১ বছর যাবত আমাদের বিলটি জলাবদ্ধতা থাকায় আমরা অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাই। এ পরিস্থিতিতে তিন গ্রামের সমন্বয়ে ধান চাষের জন্য একটি সেচ কমিটি গঠন করি। সেই কমিটির মাধ্যমে বিদ্যুতের শক্তিশালী মিটার ও পাম্প স্থাপন করে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে পানি নিস্কাশন করে ধান চাষের উপযোগী করা হয়। চলতি মৌসুমে আড়াই হাজার বিঘা জমি স্ব-স্ব কৃষক ধান করি। যা শীষ বরনীয় অবস্থায়।
তারা আরো বলেন, পূর্বের জলাবদ্ধতার কারণে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জবর দখল করে একটি মৎস্য ঘের করেন। সেচের কারণে তার ঘেরের পানি শুকিয়ে যায়। সম্প্রতি বর্ষার কারণে পানি জমে ধানের ক্ষতি হতে পারে ভেবে উজানের একটি কালভার্টের মুখ আটকিয়ে দেওয়া হয় এবং পার্শ্ববর্তী সরকারি চাঁন মল্লিকের খাল দিয়ে পানি বেতনা নদীতে নামানোর জন্য একটি শক্তিশালী পাম্পের ব্যবস্থা করি আমরা। কিন্তু চেয়ারম্যান লাল্টু তার অবৈধ মৎস্য ঘের রক্ষায় ঘেরে পানি ঢোকানোর জন্য খালের মুখ বন্ধ করে কালভার্টেন মুখটি খুলে দিয়ে আড়াই হাজার বিঘা ফলন্ত ধানি জমিতে পানি প্রবাহিত করে। ফলে সেখানে সমস্ত ধান পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ হাজার প্রান্তিক কৃষক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পথে বসেছে অনেকেই।
পরিকল্পিতভাবে একক স্বার্থে ২ হাজার কৃষকের পেটে লাথি মেরেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান লাল্টু। আমরা অবিলম্বে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পরে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম