খুলনা বিভাগ জুড়ে টিকা উৎসবে অংশ নিচ্ছে মানুষ। প্রতিদিনই হাজারো মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে হাসপাতালসহ নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে করোনা প্রতিরোধি টিকা গ্রহণ করছেন। এ কাজটি সম্পন্ন করতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে গত ১৬ দিনে বিভাগের দশ জেলার আড়াই লাখ মানুষ সিনোফার্মের টিকা গ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে যশোরে গ্রহণ করেছেন ৩৪ হাজার ৫৪৩ জন ও খুলনায় খুলনায় ৩৪ হাজার ১২৬ জন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা যায়, দেশে দ্বিতীয় দফায় গত ১২ জুলাই থেকে মানুষের মাঝে গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এসময়ে মানুষকে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা দেয়া হয়। তবে খুলনাসহ বিভাগীয় শহরে দেয়া হয় আমেরিকার তৈরি মডার্নার টিকা। গণ টিকাদানের শুরুর দিকে মানুষের রেজিস্ট্রেশন ও টিকা গ্রহণে আগ্রহ কম ছিল। কিন্তু সিনোফার্মের টিকায় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে টিকা দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে বর্তমানে তা উৎসবে রূপ নিয়েছে। এ কারণে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় মানুষ দলে দলে টিকাদান কেন্দ্রে ভিড় জমাচ্ছে। আর এ কাজে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর্মীসহ স্বেচ্ছাসেবকরা হাঁফিয়ে উঠছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা তারা অন্য কাজের কোন ফুসরত পাচ্ছেন না।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, করোনা টিকা কার্যক্রম ফের শুরু হবার পর গত ১৬ দিনে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় মোট দুই লাখ ৫৯ হাজার ৯৮২ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে যশোরে ৩৪ হাজার ৫৪৩ জন, খুলনায় ৩৪ হাজার ১২৬, বাগেরহাটে ২৮ হাজার ৭৩৮, কুষ্টিয়ায় ৪২ হাজার ৮৬১, মাগুরায় ১৬ হাজার ১৪৬, নড়াইলে ১০ হাজার ৩৬২, সাতক্ষীরায় ২৯ হাজার ২৬, ঝিনাইদহে ২৬ হাজার ৮৬৪, চুয়াডাঙ্গায় ২২ হাজার ৭৩ ও মেহেরপুরে ১৫ হাজার ২৪৩ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া খুলনায় মডার্নার টিকা গ্রহণ করেছেন ২০ হাজার ৮৬৯ জন। ইতিমধ্যে বিভাগের জেলায় ভ্যাকসিন এসেছে চার লাখ ৯১ হাজার ১শ’ ডোজ। যশোরসহ দশ জেলায় বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রদানের পরও মজুদ রয়েছে দুই লাখ ২৬ হাজার ৪৩১ ডোজ। মডার্নার টিকা মজুদ রয়েছে ৩১ হাজার ৯৩১ ডোজ।
এদিকে, যশোরে সিনোফার্মের মোট টিকা এসেছে ৯৮ হাজার ৪শ’ ডোজ। ইতিমধ্যে প্রদান করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৫৪৩ ডোজ ও মজুদ রয়েছে ৫৯ হাজার ২৩০ ডোজ। এ কারণে বর্তমানে যশোরে টিকার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মানুষ রেজিস্ট্রেশনের পর ম্যাসেজ পেয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে হাসপাতালের নাসিং ইনস্টিউট থেকে টিকা গ্রহণ করছে। যদিও গত কয়েকদিনে এ কাজে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ছিল। মঙ্গলবার থেকে বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে তা ম্যানেজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন বলেন, যশোরে করোনা প্রকিরোধি টিকার কোন কমতি নেই। স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষকে এ টিকা দেয়া হচ্ছে। তারা বুখ সংখ্যা বাড়িয়ে মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। আগামী ৭ আগষ্ট থেকে তারা ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কেন্দ্র করবেন বলে জানান। যাতে গ্রামের মানুষও এ টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি