যশোরের শার্শায় ১৮০ টাকা দরে সয়াবিন তেল কিনে দরিদ্রদের মাঝে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। বাজারের ব্যবসায়ীদের বর্তমান মূল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে উদ্ভাবক মিজানুর রহমান এ উদ্যোগ নেন।
শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ-সাতক্ষীরা মোড়ে ৩০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে ১০০ লিটার তেল বিক্রির মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করেন মিজান।
বাজারে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ৩০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে দরিদ্রদের মাঝে বিক্রি শুরু করাকে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এক অভিনব প্রতিবাদ বলছেন তিনি।
এদিকে মিজানের অভিনব প্রতিবাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসায় ভাসেন তিনি। নিউজ ফিডে ছবিটি পোস্ট দিয়ে মিজানুরকে ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
মিজানুর রহমান বলেন, যারা অবৈধভাবে তেল মজুত করে নিত্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বাজারে তেলের চাহিদা মেটাতে ডিলার বা হোলসেলারদের এখনই মানবিকতার পরিচয় দেওয়ার সময় এসেছে।
যত দিন দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে, তত দিন বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে এভাবে কম দামে তেল বিক্রি করবেন জানিয়ে মিজান বলেন, এই কার্যক্রমে অংশ নিতে দেশের সব জায়গা থেকে দানশীল ও সাদা মনের মানুষদের এগিয়ে আসা উচিত। সেই সঙ্গে সরকার-নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে বাজার থেকে ৩০ টাকা কমে এক লিটার তেল পেয়ে মিজানের এমন কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানিয়েছেন দরিদ্র ক্রেতারা।
সেলিম নামের এক ভ্যানচালক বলেন, বর্তমানে সব জিনিসের দাম বাড়লেও আমাদের ভাড়া তো বাড়েনি। তার মধ্যে তেলের দাম কয়েক গুণ। আমার জীবনে জিনিসপত্রের দাম এত বাড়তে দেখিনি। এমন সময়ে আমাদের শার্শার মোটরসাইকেল মেকানিক মিজান কম দামে তেল বিক্রি করছেন। এতে আমাদের মতো দরিদ্র মানুষের উপকার হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মিজানুর রহমানের ছোটবেলা থেকে নতুন কিছুর প্রতি অপার আগ্রহ। একে একে বানিয়েছেন অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, অগ্নিপ্রতিরোধক জ্যাকেট, অগ্নিপ্রতিরোধক হেলমেট, প্রতিবন্ধীদের জন্য মোটরগাড়ি, ডিজিটাল কাঁচি, স্বয়ংক্রিয় সেচযন্ত্র, দেশীয় প্রযুক্তির অ্যাম্বুলেন্স, দেশীয় প্রযুক্তির মোটরযান, ব্যায়ামে বিদ্যুৎ উৎপাদন এমন আরও কত কী!
উদ্ভাবক মিজানুর রহমানের (৪৭) বাড়ি যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামে। পেশায় মোটর মেকানিক। শার্শা উপজেলা সদরেই তার ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ার্স ওয়ার্কশপ নামে দোকান আছে। মোটর মেরামতের এই দোকানেই চলে জীবিকা।
খুলনা গেজেট/ এস আই