খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

স্কুল সভাপতি দায়িত্ব পাওয়ার আগেই প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত !

মেহেদী হাসান জাহিদ, কেশবপুর

সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার আগেই কেশবপুরে বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজান আলীকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করে অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন এক ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এ ঘটনার ৪ দিন পর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ আদালত উপেক্ষা করে সেই ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে ওই বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনিত করেছে। ফলে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় এসএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় উপজেলা ব্যাপী শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার বুড়িহাটি গ্রামের শাহাজান আলী বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ওই প্রতিষ্ঠানে পুর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠনে বিলম্ব হওয়ায় এলাকার মোসলেম উদ্দীন গত ৫ অক্টোবর প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জনকে আসামী করে বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন। যার নং-৫৪৯/২১।

সম্প্রতি এলাকায় গুঞ্জন ওঠে ওই মামলার বাদি মোসলেম উদ্দীন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন। এ খবরেই পূর্বশত্রুতার জের ধরে মোসলেম উদ্দীন এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার ৪ দিন আগে গত ৯ অক্টোবর কোন প্রকার সভা ছাড়াই প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে শাহাজান আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পিয়নের মাধ্যমে অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। প্রধান শিক্ষক যাতে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্যে বিদ্যালয়ের চারপাশে পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এদিকে, ১৩ অক্টোবর আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় যশোর বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহমদ স্বাক্ষরিত এডহক কমিটির সভাপতির পত্র দেয়া হয় মামলার বাদি মোসলেম উদ্দীনকে।

আগামী ১৪ নভেম্বর এসএসসি ও ২৪ নভেম্বর ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রধান শিক্ষকের বরখাস্তের ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রধান শিক্ষক শাহাজান আলী অভিযোগ করেন, ইতোপূর্বে মোসলেম উদ্দীনের বড় ছেলে তুহিন বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তার সাথে বিরোধ দেখা দেয়। এরই সূত্র ধরে অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠান বিমুখ হয়ে তাদের সন্তানদের অন্যত্র ভর্তি করান। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থী শূন্য হওয়ার উপক্রম হয়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম আরাফাত হোসেন অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে উন্নয়নসহ আবারও শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে আসতে শুরু করে। এডহক কমিটির সভাপতির কোন শিক্ষক বরখাস্ত বা নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা না থাকলেও মোসলেম উদ্দীন এ আইনের তোয়াক্কা না করেই আমাকে বরখাস্ত করেন। এছাড়া আদালতের মামলাকে উপেক্ষা করে শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মামলার বাদি মোসলেম উদ্দীনকে এডহক কমিটির সভাপতির পত্র দেয়ায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

এ ব্যাপারে মোসলেম উদ্দীন বিদ্যালয়ে পাহারার ব্যবস্থার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে পত্র সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এডহক কমিটি নিয়োগকৃত কর্তৃপক্ষ না। তারা কিভাবে একজন শিক্ষককে বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করতে পারেন তা আমার বোধগম্য নয়।’

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!